কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: পাঠ্যসূচিতে 'জীবনশৈলী ও যৌনশিক্ষার গুরুত্ব' নিয়ে আলোচনা-সভার পর এবার লিঙ্গ সাম্য নিয়ে কনভেনশনের ডাক দিল ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি । 'স্পিক আউট স্পিক লাউড' শিরোনামে এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি কনভেনশনের আয়োজন করছে ।
আগামী 13 ডিসেম্বর, শুক্রবার কলকাতার মহাবোধি সোসাইটি হলে এই কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে । যার মূল বিষয় 'লিঙ্গ ভিত্তিক ন্যায় ও সমান অধিকার'। কনভেনশনে উপস্থিত থাকবেন এসএফআই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা ।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, "এসএফআই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার অভিযান 'স্পিক আউট স্পিক লাউড'। লিঙ্গ ভিত্তিক বৈষম্য বন্ধ করতে গোটা দেশজুড়ে এসএফআই নানা জায়গায় এইরকম সেমিনার করছে। তারই অংশ হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি এই কনভেনশনের ডাক দিয়েছে।"
আরজি কর পরবর্তী সময়ে রাজ্যে সামাজিক ন্যায় ও লিঙ্গভিত্তিক ন্যায়ের কথা বারবার উঠে এসেছে । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিতরে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গেও প্রশ্ন উঠছে । গত সপ্তাহে উত্তর 24 পরগনা জেলা এসএফআই সোদপুর এলাকায় জীবনশৈলী ও যৌনশিক্ষার গুরুত্ব এবং ভালো-খারাপ স্পর্শের বিষয়ে কর্মশালারও আয়োজন করে । বনগাঁয় নারীদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয় ।
অন্যদিকে, সোদপুর ট্র্যাফিক মোড়ের নাম সরকারি ভাবে 'তিলোত্তমা মোড়' করা-সহ বিভিন্ন দাবিতে আগামী 16 ও 17 ডিসেম্বর সোদপুর থেকে বারাসত পর্যন্ত জাস্টিস মার্চের ডাক দিয়েছে উত্তর 24 পরগনা জেলা এসএফআই । এসএফআই উত্তর 24 পরগনার জেলা সম্পাদক আকাশ কর বলেন, "আরজি কর-কাণ্ডেই প্রমাণিত রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নেই । সচেতনতার অভাব মারাত্মক । অল্প বয়স থেকেই এই সচেতনতা তৈরি করার দায়িত্ব সরকারের । সরকার সেই দায়িত্ব না-নেওয়ায় আমরা নিচ্ছি ।"
এদিকে, আগামী বছর 27 সেপ্টেম্বর শতবর্ষে পদার্পণ করবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। তার আগে কার্যত তাদের বিরুদ্ধেই পথে নেমেছে ছাত্র সমাজের একাংশ । সিপিএমের ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এসএফআই)-র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি 'কনসার্ট ফর ইউনিটি, কানেক্টিং ক্যাম্পাস, কানেক্টিং সোলস’ শুরু করছে । কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী মোট 28টি রাজ্যে আগামী বছর 30 জানুয়ারি পর্যন্ত এই 'একতা এক্সপ্রেস' ক্যাম্পেইন চলবে ।
এসএফআই সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, "উপমহাদেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর শাসক শ্রেণির হিংসা-অত্যাচার চলছে । এক বছর ধরে মণিপুর জ্বলছে । কেন্দ্রের সরকার চুপ । উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে পরিকল্পিত অশান্তি শুরু হয়েছে । যার পিছনে রয়েছে আরএসএস-বিজেপি'র সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি । এর বিরুদ্ধেই আমাদের প্রচার । বাবরি মসজিদ ধ্বংসের 32 বছর পূর্ণ হচ্ছে কাল । একই ভাবে আরএসএস নেতা গান্ধিজিকে 30 জানুয়ারি হত্যা করেছিল । এসব নিয়েই সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অংশ হিসাবে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।"
এই কর্মসূচিতে দেশের সংবিধানের চেতনা ও দেশের বৈচিত্র্যকে বজায় রাখতে এসএফআই কর্মীরা সমাবেশ, আলোচনা, সেমিনার, জনসভা ও প্রতিবাদ মিছিল পরিচালনা করছেন । জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে দেওয়া হবে ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা ৷