ETV Bharat / state

একই বৃন্তে দুইটি কুসুম! গঙ্গা ভাঙনে আনজুরার আশ্রয়ে সর্বহারা মাধবী - Ganges River Bank Erosion - GANGES RIVER BANK EROSION

Ganges Erosion In Murshidabad: গঙ্গা ভাঙনে সর্বস্ব খুইয়েছেন নতুন শিবপুর গ্রামের বাসিন্দারা ৷ তাঁদেরই একজন মাধবী ৷ সব হারিয়ে পরিবার নিয়ে খুঁজছিলেন মাথার গোঁজার ঠাঁই ৷ ভাঙনে সর্বহারা মাধবীর পরিবারকে আশ্রয় দিলেন আনজুরা ৷

Ganges Erosion In Murshidabad
গঙ্গা ভাঙনে নতুন শিবপুর (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 6, 2024, 3:16 PM IST

সামশেরগঞ্জ, 6 অগস্ট: শুধুই ভাঙনের হাহাকার সামশেরগঞ্জের নতুন শিবপুরজুড়ে ৷ গঙ্গা ক্রমেই গিলছে জনপদ। বসতভিটে হারিয়ে কেউ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন। কিন্তু কে কাকে আশ্রয় দেবেন? সবাই তো আশ্রয়হীন ৷ একটু মাথা গোঁজার জন্য মাধবীও হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন। তখনই গৃহহারা মাধবীর পরিবারকে আশ্রয় দিলেন আনজুরা। সর্বগ্রাসী গঙ্গা ভিটেমাটি কেড়ে নিলেও মুছে দিল জাতপাতের বিভেদ। আপাতত তাঁর বাড়ির বারান্দাতেই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সংসার পেতেছেন মাধবী। আনজুরার এই সহমর্মিতা দেখে আপ্লুত তিনি। আপ্লুত স্থানীয় বাসিন্দারাও। আনজুরাকে কুর্নিশ করতে ভোলেননি তাঁরা।

সামশেরগঞ্জের 12 নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কিছুটা দূরে নিমতিতা রেললাইন। সেটা পেরিয়ে 100 মিটার গেলে নতুন শিবপুর গ্রাম। গ্রামের মাঝে ভাঙা রেললাইনের উপর বাঁধ। উভয় পাশেই ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতবাড়ি। সেই বাঁধের কোল ঘেঁষে বইছে গঙ্গা। জনপদ লাগোয়া কিছুটা এলাকাজুড়ে চর তৈরি হয়েছে। তারপরেই বাংলাদেশ সীমান্ত। সপ্তাহ খানেক আগেও বাঁধ থেকে 50 মিটার দূরে অবস্থান ছিল গঙ্গার। তখনও বোঝা যায়নি গঙ্গার মতিগতি ৷ নিমেষে যে সবকিছু বদলে যাবে কে জানত !

সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিলেন। ভাঙনের খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন দশটি বাড়ির সঙ্গে মাধবীর বাড়িটিও তলিয়ে গিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা কোনওক্রমে ঘর থেকে বাইরে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু গৃহস্থলীর সবকিছুই নদীর গর্ভে চলে গিয়েছে । দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার মাধবীর। এক মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামী ভ্যান চালক। বৃদ্ধ শ্বশুরেরও মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। তিনি আপাতত বাঁধের উপরই আশ্রয় নিয়েছেন। মাধবী খঁজছেন মাথা গোজার ঠাঁই ৷

নতুন শিবপুরের বাঁধ এলাকা থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে এক আমবাগানে বাড়ি আনজুরা বিবির । তাঁর কানে গৃহহীন মাধবীর খবর পৌঁছতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ৷ মাধবীর জন্য তাঁর জন্য ঘর ও বৈঠকখানাটি ছেড়ে দিয়েছেন আনজুরা । সেখানেই চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে উঠেছেন মাধবী। কিন্তু কতদিন এভাবে পড়শির বাড়িতে থাকতে পারবেন, তা নিয়েও দু’শ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে অন্যত্র জমি কিনে বাড়ি তৈরি করার সামর্থ্য নেই তাঁর। পরে কোথাও ভাড়াবাড়ির খোঁজ পেলে সেখানেই উঠবেন বলে জানিয়েছেন মাধবী।

এক বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে আক্ষেপ করে মাধবী বলছিলেন, "আমরা কিছু বুঝতেই পারিনি। হঠাৎই গোটা এলাকা ধসে গেল। এখন ওরা থাকতে দিয়েছে। কতদিন এভাবে আর লোকের বাড়িতে কাটাব ? একটা ভাড়া বাড়ি পেলে সেখানেই না-হয় চলে যাব। এখন পর্যন্ত সরকারি একখানা ত্রিপলও পাইনি।" সামশেরগঞ্জ ব্লকের বিডিও সুজিতচন্দ্র লোধ বলেন, "ত্রিপল পায়নি, এমন যদি কেউ বাদ পড়ে থাকে, আমার অফিসে দেখা করলে তাঁদের ত্রিপল দেওয়া হবে।"

সামশেরগঞ্জ, 6 অগস্ট: শুধুই ভাঙনের হাহাকার সামশেরগঞ্জের নতুন শিবপুরজুড়ে ৷ গঙ্গা ক্রমেই গিলছে জনপদ। বসতভিটে হারিয়ে কেউ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন। কিন্তু কে কাকে আশ্রয় দেবেন? সবাই তো আশ্রয়হীন ৷ একটু মাথা গোঁজার জন্য মাধবীও হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন। তখনই গৃহহারা মাধবীর পরিবারকে আশ্রয় দিলেন আনজুরা। সর্বগ্রাসী গঙ্গা ভিটেমাটি কেড়ে নিলেও মুছে দিল জাতপাতের বিভেদ। আপাতত তাঁর বাড়ির বারান্দাতেই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সংসার পেতেছেন মাধবী। আনজুরার এই সহমর্মিতা দেখে আপ্লুত তিনি। আপ্লুত স্থানীয় বাসিন্দারাও। আনজুরাকে কুর্নিশ করতে ভোলেননি তাঁরা।

সামশেরগঞ্জের 12 নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কিছুটা দূরে নিমতিতা রেললাইন। সেটা পেরিয়ে 100 মিটার গেলে নতুন শিবপুর গ্রাম। গ্রামের মাঝে ভাঙা রেললাইনের উপর বাঁধ। উভয় পাশেই ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতবাড়ি। সেই বাঁধের কোল ঘেঁষে বইছে গঙ্গা। জনপদ লাগোয়া কিছুটা এলাকাজুড়ে চর তৈরি হয়েছে। তারপরেই বাংলাদেশ সীমান্ত। সপ্তাহ খানেক আগেও বাঁধ থেকে 50 মিটার দূরে অবস্থান ছিল গঙ্গার। তখনও বোঝা যায়নি গঙ্গার মতিগতি ৷ নিমেষে যে সবকিছু বদলে যাবে কে জানত !

সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিলেন। ভাঙনের খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখেন দশটি বাড়ির সঙ্গে মাধবীর বাড়িটিও তলিয়ে গিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা কোনওক্রমে ঘর থেকে বাইরে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু গৃহস্থলীর সবকিছুই নদীর গর্ভে চলে গিয়েছে । দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার মাধবীর। এক মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্বামী ভ্যান চালক। বৃদ্ধ শ্বশুরেরও মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। তিনি আপাতত বাঁধের উপরই আশ্রয় নিয়েছেন। মাধবী খঁজছেন মাথা গোজার ঠাঁই ৷

নতুন শিবপুরের বাঁধ এলাকা থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে এক আমবাগানে বাড়ি আনজুরা বিবির । তাঁর কানে গৃহহীন মাধবীর খবর পৌঁছতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ৷ মাধবীর জন্য তাঁর জন্য ঘর ও বৈঠকখানাটি ছেড়ে দিয়েছেন আনজুরা । সেখানেই চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে উঠেছেন মাধবী। কিন্তু কতদিন এভাবে পড়শির বাড়িতে থাকতে পারবেন, তা নিয়েও দু’শ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে অন্যত্র জমি কিনে বাড়ি তৈরি করার সামর্থ্য নেই তাঁর। পরে কোথাও ভাড়াবাড়ির খোঁজ পেলে সেখানেই উঠবেন বলে জানিয়েছেন মাধবী।

এক বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে আক্ষেপ করে মাধবী বলছিলেন, "আমরা কিছু বুঝতেই পারিনি। হঠাৎই গোটা এলাকা ধসে গেল। এখন ওরা থাকতে দিয়েছে। কতদিন এভাবে আর লোকের বাড়িতে কাটাব ? একটা ভাড়া বাড়ি পেলে সেখানেই না-হয় চলে যাব। এখন পর্যন্ত সরকারি একখানা ত্রিপলও পাইনি।" সামশেরগঞ্জ ব্লকের বিডিও সুজিতচন্দ্র লোধ বলেন, "ত্রিপল পায়নি, এমন যদি কেউ বাদ পড়ে থাকে, আমার অফিসে দেখা করলে তাঁদের ত্রিপল দেওয়া হবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.