মৈপীঠ, 13 জানুয়ারি: গত একসপ্তাহ ধরে চলা লুকোচুরির পর্ব শেষ হল ৷ অবশেষে খাঁচাবন্দি হল দক্ষিণরায় ৷ রবিবার রাতে সুন্দরবনে মৈপীঠে বন দফতরের তরফে ছাগলের টোপ দিয়ে পাতা খাঁচায় বন্দি হয়েছে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ৷ সেটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে ৷ তাকে সোমবারই সুন্দরবনের মূল জঙ্গলের গভীরে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএফও ৷
সুন্দরবনের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, "ছাগলের টোপ দিয়ে যে খাঁচা পাতা হয়েছিল, তাতে বাঘটি ধরা পড়েছে ৷ তবে, ছাগলটিকে খায়নি সে ৷ পশু চিকিৎসক বাঘের শারীরিক পরীক্ষা করেছেন ৷ একেবারে সুস্থ সবল অবস্থায় রয়েছে সে ৷ তাকে পরিমাণ মতো মাংস খেতে দেওয়া হয়েছিল ৷ পুরোটাই খেয়েছে ৷ সোমবারই বাঘটিকে দূরে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে ৷"
উল্লেখ্য, গত একসপ্তাহে তিনবার কুলতলি ও মৈপীঠে লোকালয়ে বাঘ ঢুকে যায় ৷ নিশ্চিতভাবে বলতে না-পারলেও ডিএফও জানাচ্ছেন, পায়ের ছাপ ও আকার-আকৃতি দেখে তাঁদের অনুমান, একটি বাঘই দু’জায়গায় ছিল ৷ গত 6 জানুয়ারি মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুর এলাকায় প্রথম বাঘের পায়ে ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা ৷
বন দফতর বাঘটিকে ধরার চেষ্টা করলেও, সেটি ধরা দেয়নি ৷ 8 জানুয়ারি বন দফতর জানায়, ওইদিন ভোররাতে বাঘটি জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে ৷ কিন্তু, পরের দিন সকালে মৈপীঠের নগেনাবাদ এলাকায় নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা ৷ বন দফতর দ্রুততার সঙ্গে ওই এলাকার জঙ্গলের 1 কিলোমিটার জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে ৷ ফলে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকতে পারেনি বাঘটি ৷ বাঘটি আবারও গভীর জঙ্গলে ফিরে যায় ৷
কিন্তু, দু’দিনের মধ্যে ফের মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুরে নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায় ৷ যার জেরে ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা ৷ বন দফতর জানায়, মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে বাঘটি আজমলমারির জঙ্গল থেকে লোকালয় ঢুকেছে ৷ বাঘ ধরতে এবার ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা হয় ৷ সেই টোপেই বাঘটি রবিবার রাতে ধরা পড়ে ৷
ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, "পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক ৷ যেহেতু বারবার গ্রামে ঢুকে পড়ছে, তাই আমরা দূরে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে বাঘটিকে ছাড়ার কথা ভাবছি ৷ এ নিয়ে আমরা আইল্যান্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব ৷ পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাঘ এটি, ওজন 120 কেজির বেশি ৷ বন দফতরের 70-80 জন কর্মী ও গ্রামবাসীরা মিলে একসঙ্গে কাজ করেছে ৷ তার ফলেই এই সাফল্য পাওয়া গিয়েছে ৷"