সোদপুর, 23 সেপ্টেম্বর: স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষকে জেরা-সহ একাধিক বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন আরজি করে নিহত পড়ুয়া চিকিৎসকের বাবা-মা ৷ সোমবার বিকেলে তাঁরা বলেন, "সিবিআই মনে করেছে বলেই ওঁকে (নির্মল ঘোষ)ডেকেছে । সিবিআইয়ের উপর আমাদের 100 শতাংশ আস্থা রয়েছে । ঘটনার দিন আমরা নির্মল ঘোষকে ডাকিওনি । ওঁর সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল । পরে, আর ওঁকে দেখা যায়নি । তবে শ্মশানে উনি হাজির ছিলেন । ওই সময় আমাদের সঙ্গে ওঁর কোনও কথাই হয়নি । একবার শুধু আমার সঙ্গে ছিলেন। তারপর আর দেখিনি ।"
অভিযোগ উঠছে, নির্মল ঘোষ এবং সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়কে নাকি আপনারাই ডেকেছিলেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন,"নির্মল ঘোষকে ডাকা হয়নি। তবে, সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় এবং স্থানীয় কাউন্সিলর সোমনাথ দে দু'জনকেই ফোন করে ডেকেছিলাম আমি। সঞ্জীবকে বলেছিলাম হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ।"
সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি নাকি ময়নাতদন্ত দ্রুত করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন । বলেছিলেন দ্রুত ময়নাতদন্ত না হলে তিনি 'রক্তগঙ্গা বইয়ে দেবেন ।' এর জবাবে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন,"এই বিষয়ে আমরা কিছু জানি না । তবে, গতকাল টেলিভিশনে এরকম একটা খবর দেখেছি । এরকম কোনও কথা কাউকে বলতে আমরা শুনিনি । যদি সঞ্জীবের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ উঠে থাকে,তাহলে নিশ্চয় আদালত বিষয়টি দেখবে । এই নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই ।" সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনাদের কী রকম সম্পর্ক ? এর উত্তরে নির্যাতিতার বাবা বলেন,"একজন প্রতিবেশীর সঙ্গে যে রকম সম্পর্ক হওয়া উচিত, সেরকমই সম্পর্ক । ওঁর সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক ।"
সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁদের অনুমতি নিয়েই অভিযোগপত্র সই করা হয়েছে ৷ এর জবাবে নির্যাতিতার ছাত্রীর মা বলেন, "আমরা কাউকে অনুমতি দিইনি ।" এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন,"এরকম কোনও ঘটনার কথা জানি না । তবে, সেদিন শ্মশানে গিয়ে দেখেছি আমার মেয়েকে যেন ভিআইপি মর্যাদা দিতে ব্যস্ত সকলে । গিয়ে দেখছি সবকিছু রেডি হয়ে গিয়েছে । আমার মেয়ের মরদেহ শুইয়ে দেওয়া হয়েছে । আমাদের কিছুই করতে দেওয়া হয়নি । এটা দেখে খুব খারাপ লেগেছে ।"
ময়নাতদন্ত নিয়ে কী আপনাদের তাড়াহুড়োর কোনও ব্যাপার ছিল ? এর উত্তরে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "সকালের দিকে মেয়েকে দেখার তাড়াহুড়ো ছিল ঠিকই । কিন্তু,পরে আর তাড়াহুড়োর ব্যাপার ছিল না । সেই সময় আমার মেয়েকে দেখতে না পেয়ে একটু টেনশনই হচ্ছিল ।"একই সুর শোনা গিয়েছে নির্যাতিতার মায়ের গলাতেও । তাঁর কথায়,"আমরা তো সেদিন মেয়ের দেহ নিতে চাইনি। টালা থানায় গিয়ে সে কথা জানিয়েওছিলাম। কিন্তু পুলিশের চাপে সেখান থেকে বাড়ি চলে আসতে বাধ্য হই ।" তবে, প্রতিবেশী সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েই যে টালা থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা, সেকথা অবশ্য এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি ।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর শুনানি দু'দিন পিছিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন,"সুপ্রিম কোর্ট যেটা ভালো বুঝেছে সেটাই করেছে । এই নিয়ে আলাদাভাবে কিছু আমাদের বলার নেই ।"