কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: আরও একবার সোশাল মিডিয়ায় সরব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় । আগেও আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাত জাগা কর্মসূচির দিন তিনি সোশাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছিলেন । নিজেও এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন । পরবর্তীতেও তাঁর নানা মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলেছে তাঁর দলকে ৷ আর আজ আরও এক রাত দখলের কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ দিনে মৌলিক অধিকার পুনর্দখলের দাবিতে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ ৷
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখেন্দুশেখর রায় লিখেছেন, "রাত পুনর্দখল করুন ৷ একইসঙ্গে সংবিধানের 21 নম্বর অনুচ্ছেদে মানুষের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার যে মৌলিক অধিকার দেওয়া আছে তাও পুনর্দখল করুন ।"
Reclaim the night- Reclaim peoples’ fundamental right to live with human dignity as enshrined in Article 21 of the Constitution of India.🌹
— Sukhendu Sekhar Ray (@Sukhendusekhar) September 4, 2024
প্রসঙ্গত, রাজ্যে যখন আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টদের বিক্ষোভ প্রতিদিন নতুন মাত্রা পাচ্ছে, তখন শাসকদলের সাংসদ হয়ে এই ঘটনা নিয়ে সুখেন্দুশেখরের একের পর এক পোস্ট দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে ৷ গত রবিবারও মহামিছিলের দিনে বাস্তিল দুর্গ পতনের প্রসঙ্গ টেনে তাৎপর্যপূর্ণ একটি পোস্ট করেন তৃণমূল সাংসদ, যা নিয়ে জোর চর্চা চলে রাজনৈতিক মহলে ৷
ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়ে তিনি সেদিন লিখেছিলেন, "1789 সালের জুলাই মাস..বিক্ষোভকারীরা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল বাস্তিল দুর্গ । জন্ম হয়েছিল ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লবের ।" রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলতে থাকেন, জুলাই মাসের ফরাসি বিপ্লবের কথা হঠাৎ মনে করানোর পেছনে বিশেষ কারণ থাকতে পারে তৃণমূল সাংসদের ৷ প্রশ্ন ওঠে, তবে কি আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে জনতার যে রোষ তাতেই বাস্তিল দুর্গের মতো ভেঙে পড়তে পারে তৃণমূলের সাম্রাজ্য, এটাই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন সুখেন্দুশেখর ?
এর আগে, সোশাল মিডিয়ায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ চেয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি । এর জন্য কলকাতা পুলিশের সমনের মুখোমুখিও হতে হয় তাঁকে । আর এবার মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ ৷ তাঁর এদিনের পোস্টটি নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "একদা সুখেন্দুশেখর রায় তো তৃণমূলের সব পাপেরই সাথী ছিলেন । এখন তিনি এমন কিছু বক্তব্য রাখছেন যেখানে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে । এখন তিনি সোশাল মিডিয়াতে অনেক কথা বলছেন । আমি মনে করি, তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত পদ ত্যাগ করা উচিত । প্রথমত আমি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলব, আবার ধমক দিলে পোস্ট ডিলিট করে নেব । এক্ষেত্রে যে চারিত্রিক দৃঢ়তা দরকার তা কোথায় ! তাঁর অবস্থান নিয়ে গ্যারান্টি কোথায় ! তাঁর বক্তব্য যে যথার্থ তাতে কোনও সন্দেহ নেই । কিন্তু কাল তিনি যে তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসবেন না তার কী গ্যারান্টি আছে !"
অন্যদিকে, এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও । তিনি বলেন, "এখন তাঁকে এ ধরনের কথা বলতে হচ্ছে, কারণ উনিও দেখছেন সন্দীপ ঘোষকে বাঁচাতে গিয়ে প্রশাসন তার প্রোমোশন দিচ্ছে । যাকে সরিয়ে দেওয়ার দরকার সেই বিনীত গোয়েলকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে । সে কারণেই এইসব কথা বলা হচ্ছে । আর সে কারণেই শাসকদলের সাংসদকেও বলতে হচ্ছে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারের পুনর্দখল করুন ।"