সোনারপুর, 15 জুন: পরিচারিকার কাজ করে জমিয়ে ছিলেন লক্ষাধিক টাকা ৷ সারা জীবনের সেই সঞ্চয় ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিতেই নিজের বাড়ি মথুরাপুরে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা গীতা হালদার ৷ সেখান থেকে সল্টলেকে ফিরে যাওয়ার জন্য সোনারপুর স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি ৷ তখনই স্টেশনে টাকার ব্যাগটি হারিয়ে ফেলেন 74 বছরের গীতা হালদার ৷ সেই টাকাই ফিরিয়ে দিল সোনারপুর পুলিশ ৷ সার জীবনের জমানো টাকা ফিরে পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে বৃদ্ধার ৷
প্রায় 40 বছর ধরে সল্টলেকের একটি বাড়িতে পরিচারিকার করতেন ওই বৃদ্ধা ৷ সেখান থেকে তিলতিল করে জমিয়েছিলেন 1 লক্ষ 27 হাজার টাকা ৷ সারা জীবনের এই সঞ্চয় তিন ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷ সেইমতোই নিজের বাড়ি মথুরাপুরে যান গীতা হালদার ৷
বাড়িতে পাঁচ সন্তানকে ডাকেন টাকার ভাগ দেওয়ার জন্য ৷ তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে তখন সেখানে ছিলেন ৷ তবে এক মেয়ে ছিলেন না ৷ সেই মেয়েকে ভাগের টাকা নিয়ে সল্টলেকে উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ তাই সোনারপুর স্টেশনে যখন তিনি ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন সেই সময়েই খোয়া যায় টাকার ব্যাগটি ৷ যেখানে টাকা ছাড়াও ছিল এক জোড়া সোনার বালা ৷ এরপরই ওই বৃদ্ধা কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে পুলিশে যোগাযোগ করেন ৷
বৃদ্ধার কথা মতো সোনারপুর পুলিশ খোয়া যাওয়া ব্যাগ উদ্ধারে তৎপর হয় ৷ কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সোনারপুর রেল পুলিশের আধিকারিকেরা সোনারপুরের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করে ৷ তাকে তল্লাশি করে 1 লক্ষ 27 হাজার টাকা ও দু’টি সোনার বালা উদ্ধার করে । উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র ওই বৃদ্ধার হাতে তুলে দেন রেল পুলিশের আধিকারিকেরা । সারা জীবনের জমানো সঞ্চয় ফিরে পেয়ে চোখের জলে রেল পুলিশের আধিকারিকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি ওই বৃদ্ধা।
বৃদ্ধার ছেলে বিমল হালদার বলেন, "আমার মা 40 বছর ধরে লোকের বাড়িতে কাজ করে করে এই টাকা জমিয়েছিলেন ৷ সেই টাকা 5 ভাই-বোনের মধ্যে ভাগ করে দিতে চেয়ে ছিলেন ৷ সকলকে দিয়ে দিলেও আমার বোন আসেনি ৷ সেই অংশের টাকা নিয়ে মা কলকাতায় ফিরে আসছিল ৷ তখনই সোনারপুরের কাছে মায়ের ব্যাগ হারিয়ে যায় । মা রেল পুলিশের কাছে যান সাহায্যের জন্য ৷ সোনারপুর রেল পুলিশের আধিকারিকদের সহায়তায় তা ফিরে পান।" মায়ের শেষ জীবনের সম্বল ফিরিয়ে দেওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি বিমলবাবু ৷