দার্জিলিং, 19 সেপ্টেম্বর: ফের প্রশ্নের মুখে সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তার মধ্যেই ফের প্রশ্নের মুখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা । ফের পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
অভিযোগ পাওয়ার পর এদিন হাসপাতাল পরিদর্শনে যান শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর ও ডিসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা ৷ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । এমনকী জরুরি বিভাগে সব সময় দু'জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকার কথা থাকলেও সেই মতো সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘বুধবার জরুরি বিভাগে এক রোগী’র পক্ষের সঙ্গে আমাদের বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের বচসা বাঁধে । অযথা ইমারজেন্সি বিভাগে ভিড় করায় আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে । তারপরেই তাঁরা মারমুখী হয়ে ওঠে । সে সময় জরুরি বিভাগে ও তার আশেপাশে কোনও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি । আমাদের গার্ডরা পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার পর এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার জরুরি বিভাগে যান ।’’
এমনকী ওই ঘটনার পরেও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জরুরি বিভাগে কোনও পুলিশের দেখা পাওয়া যায়নি বলে জানান হাসপাতাল সুপার । তিনি আরও বলেন, ‘‘আরজি কর কাণ্ডের পর পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছিল । সেখানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, লেডিস হস্টেল-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েনের কথা বলা হয়েছিল । জরুরি বিভাগে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সারাক্ষণ দু’জন করে পুলিশ মোতায়েন থাকার কথা ছিল । সেজন্য জরুরি বিভাগে তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে । কিন্তু জরুরি সব সময় পুলিশের দেখা মিলছে না । জরুরি বিভাগের সামনে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন । কোনও কারণে রোগীপক্ষ তাদের উপর হামলা চালালে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যাবে ।’’
ওই ঘটনার অভিযোগ পেতেই এদিন বিকেল নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন কমিশনার সি সুধাকর । তিনি হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক, অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহার সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন ৷ বৈঠকের পর জরুরি বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি । তবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি কেউই । তবে ডিসিপি বিশ্বচাঁদ ঠাকুর জানান, হস্টেল-সহ সব জায়গাতেই পুলিশ মোতায়েন থাকছে । এছাড়া পুলিশের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে । যদি কোথাও কোনও সমস্যা হয়, কোনও অভিযোগ থাকে তা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।