কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: 8 ডিসেম্বর অর্থাৎ, রবিবার থেকেই পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, প্যাটিস, পিৎজা ব্রেড-সহ একশো রকমের বেকারি পণ্যের দাম বাড়ছে ৷ প্রায় 30-35 শতাংশ দাম বাড়ানো হচ্ছে ৷ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে একথা ঘোষণা করে পশ্চিমবঙ্গ বেকার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি ৷
সংগঠনের মূল বক্তব্য, বেকারির 100 রকম খাবার তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম অনেকটাই বেড়েছে ৷ সেই কারণেই দু'বছরের ব্যবধানে ফের দাম বাড়ানো হচ্ছে ৷ বেকারি শিল্প ও এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের কথা চিন্তা করেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা ৷ তাঁরা অভিযোগ করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র-রাজ্য উভয়ের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সমাধান মেলেনি ৷ তাই, সাধারণ মানুষের থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি ৷
পশ্চিমবঙ্গ বেকার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ইসমাইল হোসেন বলেন, "পাউরুটি ও বেকারিজাত দ্রব্যের উৎপাদনের কাঁচামালের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় একশোটি বেকারিজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করা হল ৷ সরকার কাঁচামালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি ৷ তাই একেবারে নিরুপায় হয়েই পাউরুটি-সহ বেকারিজাত সমস্ত দ্রব্য যেমন-কেক, বিস্কুট প্রভৃতির মূল্য 30-35 শতাংশ বৃদ্ধি করতে বাধ্য হচ্ছি ৷"
বতর্মানে রাজ্যব্যাপী প্রতি 400 গ্রাম পাউরুটির দাম 32 টাকা ৷ দাম বাড়ার পর তা হবে, 36 টাকা ৷ 200 গ্রাম পাউরুটির দাম 16 থেকে 18 টাকা হচ্ছে ৷ আর প্রতি 100 গ্রাম পাউরুটির দাম 8.50 টাকা থেকে 9 টাকা করা হচ্ছে ৷ সংগঠনের দাবি, পুরনো দামে বেকারির খাবার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না ৷
উল্লেখ্য, 2022 সালের নভেম্বর সালে শেষবার মূল্যবৃদ্ধির সময় কাঁচামালের দাম ছিল-
ময়দা- 3 হাজার টাকা প্রতি কুইন্টাল
চিনি- 3,800 টাকা প্রতি কুইন্টাল
ডালডা/তেল- 100 টাকা প্রতি কেজি
পলিথিন ব্যাগ- 200 টাকা প্রতি কেজি
জ্বালানি কাঠ- 800 টাকা প্রতি কুইন্টাল
বর্তমানে ডিসেম্বর, 2024 সালে কাঁচামালের দাম-
ময়দা- 3,700 টাকা প্রতি কুইন্টাল
চিনি- 4,200 টাকা প্রতি কুইন্টাল
ডালডা/তেল- 150 টাকা প্রতি কেজি
পলিথিন ব্যাগ- 250 টাকা প্রতি কেজি
জ্বালানি কাঠ- 1 হাজার টাকা প্রতি কুইন্টাল
একইভাবে বেকারি শিল্পে ব্যবহৃত কেমিক্যাল যেমন, গ্লুটেন ও ক্যালসিয়ামের দাম 25 শতাংশ ও বিদ্যুতের দাম 60 শতাংশ বেড়েছে ৷ এই সবদিক খতিয়ে দেখে এবং রাজ্যে বেকারি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই দাম বাড়ানোর পথে হাঁটছে তারা ৷
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "আমার-আপনার সকলের খরচ বেড়েছে আয় বাড়েনি, তা সকলের জানা ৷ কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারের এদিকে দৃষ্টিপাত করা উচিত ৷ আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় তিন হাজার বেকারিতে ওতপ্রোতভাবে পাঁচ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন ৷ প্রতিদিন কলকাতাতে চার লাখ এবং গোটা রাজ্যে প্রায় 10 লাখ পাউন্ড পাউরুটি আমরা বিক্রি করে থাকি ৷ ফলে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে, আমরা দাম বৃদ্ধির পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছি ৷"