বোলপুর, 6 সেপ্টেম্বর: বিশ্বভারতীর ভিন রাজ্যের আবাসিক ছাত্রীর দেহ ময়নাতদন্ত করা হল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ আরজি কর থেকে শিক্ষা নিয়ে আর কোনও রকম গাফিলতি চাইছে না পুলিশ ৷ তাই দেহ বোলপুর থেকে রামপুরহাটে নিয়ে যাওয়া হল ৷ ময়নাতদন্তের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় ।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর ছাত্রী অনামিকা সিং বিশ্বভারতীর শিল্প সদনের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিশ্বভারতীর আম্রপালি ছাত্রী নিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন তিনি ৷ তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ মৃত্যুর কারণ নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা । তাতেই ছাত্রী নিবাসের সুরক্ষা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন ৷ কেন নেই সিসি ক্যামেরা, নেই মহিলা নিরাপত্তারক্ষী !
এদিন উত্তরপ্রদেশ থেকে ছাত্রীটির বাবা-মা ও ভাই আসেন ৷ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেহ দেখেন তাঁরা ৷ আরজি করের চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ আর কোনও গাফিলতি করতে চায়নি । তাই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় ৷ সেখানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত হয় ৷ তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে । পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে । ছাত্রীর ফোন পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷
বিশ্বভারতী ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রী নিবাসেই বিষ খান ওই ছাত্রী ৷ পরে তাঁকে সহপাঠীরা প্রথমে বিশ্বভারতীর নিজস্ব পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে, পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান ৷ সেখানেই চিকিৎসক ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ এরপরেই উত্তেজনা ছড়ায় বিশ্বভারতীতে ৷
শুক্রবার রাতেই শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ ছাত্রী নিবাসে তদন্তে যায় ৷ কেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ছাড়াই পুলিশ ছাত্রী নিবাসে প্রবেশ করল ? এই প্রশ্ন তুলে পুলিশকে প্রায় 2 ঘণ্টা আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ । পরে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ও বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব এসে পরিস্থিতি সামাল দেন ৷
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য তথা দেশ ৷ সেই আবহে বিশ্বভারতীর ছাত্রী নিবাসে ভিন রাজ্যের ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ কেন ছাত্রী নিবাসে সিসি ক্যামেরা নেই, কেন মহিলা নিরাপত্তারক্ষী নেই এই প্রশ্নে সরব হয়েছেন পড়ুয়ারা ৷
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বলেন, "বিশ্বভারতীতে মাত্র 15 জন মহিলা নিরাপত্তারক্ষী । 5 জন করে আসেন ৷ তাই সব হস্টেলে মহিলা রক্ষী রাখা যায় না ৷ তবে একটা ঘটনা যখন ঘটেছে, ছাত্রীদের দাবি মতো এই হস্টেলে মহিলা রক্ষী রাখা হবে ৷"