সোনারপুর, 19 জুলাই: অবশেষে গ্রেফতার সোনারপুরের ত্রাস জামাল সর্দার। তিন দিনের চেষ্টায় শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা থেকে জামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েকদিনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত জামাল ৷ অভিযোগ আসার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল সে ৷ এরপর তিনদিনের পুলিশি তল্লাশির পর অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।
গত 7 জুলাই জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে এলাকার মহিলাদের নির্যাতনের ৷ বুধবার জামালের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় নতুন একটি এফআইআর দায়ের হয়। সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জামাল। তার বিরুদ্ধে হেনস্থা এবং তোলাবাজির অভিযোগ করেন রুবিজান বিবি নামে এক মহিলা। অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পরেও শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। জামাল চেয়েছিল 20 হাজার টাকা। শেষমেশ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তারপরও রেহাই মেলেনি। মাস দেড়েকের মধ্যে বাকি 15 হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জামাল।
রুবিজানের স্বামী জানান, তাঁদের পারিবারিক একটি গন্ডগোল হয়েছিল। সেই কারণে এক দিন রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জামালের লোকজন। সালিশি সভার নামে এক মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করা হয়েছে বলে জানান তিনি ৷ ওই ঘটনায় জামালের দুই সঙ্গী মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করে সোনারপুরের থানার পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে জামালের খোঁজ মিলছিল না। একের পর এক গ্রামবাসী তার বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্থা, তোলাবাজির অভিযোগ জানাতেই এলাকা থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত জামাল সর্দার। অভিযুক্ত জামালের বাড়ি কোনো রাজপ্রাসাদের থেকে কম নয়। বাড়ির নিরাপত্তার জন্য 50টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা ৷ এছাড়াও জামালের শখ ছিল রাজকীয় ৷ l বাড়ির সুইমিংপুলে ছিল বিরল প্রজাতির কচ্ছপ ৷ ছিল বেশ কিছু ঘোড়াও। এই সমস্ত কিছু দেখাশোনা করার জন্য ছিল প্রশিক্ষকও ৷
অভিযোগের পর এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয় অভিযুক্ত জামাল সর্দার। জামালকে গ্রেফতারের জন্য মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের উপর ভরসা করে বারুইপুর পুলিশ ৷ মঙ্গলবার জামালের মোবাইল ফোন সুইচ অফ হয় ভাঙড়ে এলাকার কাছে। মোবাইল ফোনের সেই সূত্র ধরে ভাঙড়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে বারুইপুর এবং কলকাতা পুলিশ। অবশেষ শুক্রবার লেদার কমপ্লেক্স থানা ও নরেন্দ্রপুর থানার সংলগ্ন এলাকার একটি গোপন আস্তানা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন রুজু করেছে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ।