বারাসত, 6 মার্চ: কথা ছিল মোদির সভামঞ্চে উঠে সরাসরি তাঁর সামনে নিজেদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরবেন সন্দেশখালির মহিলারা। কিন্তু, সভাস্থলে এসেও তা আর হল না। অভিযোগ, এর নেপথ্যে রয়েছে পুলিশের অতি সক্রিয়তা। মোদির সভামঞ্চে উঠে যন্ত্রণার কথা তুলে ধরতে না-পারায় শেষে সভাস্থলেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নির্যাতিতা মহিলারা। বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতৃত্বকে। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠে। ক্ষোভ-বিক্ষোভের জেরে একপ্রকার চাপে পড়ে সন্দেশখালির পাঁচ নির্যাতিতা মহিলাকে ডেকে সভাস্থলের পিছনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেন সুকান্ত, শুভেন্দু'রা ।
সেখানে তাঁদের ওপর হওয়া নির্যাতন এবং যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে। সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদি সন্দেশখালির নির্যাতিতা মহিলাদের আশ্বস্ত করে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁদের লড়াই-সংগ্রামকেও কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, এদিন সকলেই যদি প্রধানমন্ত্রীর সভামঞ্চে উঠে নিজেদের যন্ত্রণার কথা নরেন্দ্র মোদির সামনে তুলে ধরতে পারতেন তাহলে আরও খুশি হতে পারতেন সন্দেশখালির নির্যাতিতা মহিলারা। এমনটাই বলছেন তাঁরা।
লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালি কাণ্ডকে হাতিয়ার করে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর গেরুয়া শিবির । সেই কারণে সন্দেশখালির মহিলাদের ওপর অত্যাচার এবং নির্যাতন। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নির্যাতিত মহিলাদের মুখ থেকেই শুনবেন বলে ঠিক ছিল । তাই, সাতসকালেই সন্দেশখালির একাধিক গ্রাম থেকে নির্যাতিতা মহিলারা ফেরিঘাট পেরিয়ে বাসে করে রওনা হয়েছিলেন বারাসতের সভামঞ্চের দিকে। কিন্তু পথে তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।
যদিও, সেই বাধা অতিক্রম করে যতক্ষণে তাঁরা বারাসতে মোদির সভাস্থলে পৌঁছন। ততক্ষণে প্রধানমন্ত্রী সভা প্রায় শেষের দিকে। ব্যারিকেড দাঁড়িয়ে নির্যাতিতা মহিলাদের কেউ কেউ চিৎকার করে মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, তা সভামঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছয়নি। ফলে, মোদির মঞ্চে উঠে সেখানে তাঁর সামনে আর নিজেদের যন্ত্রণার কথা তোলা সম্ভব হয়নি। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সন্দেশখালির নির্যাতিততা মহিলারা।
শুরু হয় বিক্ষোভ। তাঁদের সেই আন্দোলনে সামিল হন গ্রামের পুরুষরাও। পরিস্থিতি ক্রমশ বেগতিক হতে দেখে শেষে তাতে হস্তক্ষেপ করেন রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচজন মহিলার দেখা করার অনুমতি মেলে। সেখানেই তুলে ধরা হয় শাহজাহান বাহিনীর অত্যাচার এবং নির্যাতনের কথা। এই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার কিংবা শুভেন্দু অধিকারী কিছু বলতে না-চাইলেও এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল । তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের ব্যবহার করে নবান্নের চেয়ারে বসেছেন । এই মহিলারাই একদিন তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাবে । এনিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই ।’’
আরও পড়ুন: