মেদিনীপুর, 26 ফেব্রুয়ারি: গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি ৷ বিশেষ করে তৃণমূল নেতা শাহাজানকে ঘিরে এখনও রাজ্য রাজনীতিতে নাম রয়েছে সন্দেশখালীর। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমাগত বেড়েই চলছে। শুধু শাহজাহান নয়, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছে গ্রামবাসীরা ৷ স্থানীয়দের প্রবল চাপে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই অজিত মাইতিকে ৷ আর এত কিছুর মধ্যে অন্যদিকে, নাম বিভ্রাটে জড়িয়ে পড়লেন আরেক অজিত মাইতি ৷ মেদিনীপুরের পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি ৷ বাধ্য হয়ে তিনি এক ভিডিয়ো বার্তার মধ্যে জানালেন তিনি সন্দেশখালীর অজিত মাইতি নন, তিনি মেদিনীপুরের বিধায়ক অজিত মাইতি।
প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, সন্দেশখালির এই উত্তপ্ত পরিবেশের জন্য দায়ী শেখ শাহাজান। তাঁর সঙ্গে ওখানকার অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতির নাম উঠে এসেছে। সেই অজিত মাইতিকে রীতিমত তাড়া করে সেখানকার জনতা এবং তাঁকে ঘরে আটকে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই অজিত মাইতির জেরে নাম বিভ্রাটে জড়িয়ে পড়েন মেদিনীপুরের বিধায়ক অজিত মাইতি ৷ যার জেরে কার্যত শিরোনামে মেদিনীপুরের অজিত মাইতি উঠে এসেছেন বলে দাবি তাঁর ৷ ফলে তৃণমূল নেতা হিসাবে নাম মিলে যাওয়ায় সেই অজিত মাইতিকে নিয়েও বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অনেকে অজিতবাবুকে ফোন করে পর্যন্ত খোঁজ খবর নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। অনেকে তার বাড়ির আশেপাশেও খতিয়ে দেখেন ঘটনা ৷
যদিও এই পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি গত 20 দিন ধরে হার্টের সমস্যার কারণে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি একটু সুস্থবোধ হতেই এই খবর দেখে কার্যত ভেঙে পড়েন। তিনি বাধ্য হয়ে এক প্রকার বিবৃতি রাজি করেন ৷ একই সঙ্গে, ভিডিয়ো বার্তায় তিনি জানান, তিনি সন্দেশখালির অজিত মাইতি নন, তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার 15টি বিধানসভার মধ্যে অন্যতম পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি। তাঁর নাম করে, যেসব সাংবাদিক এবং নিউজ চ্যানেল বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন তারা যেন ভুল শুধরে নেন বলেও জানিয়েছেন অজিত মাইতি।
এই ভিডিয়ো বার্তায় পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতিকে বলতে শোনা যায়, "আমি গত 15-20 দিন ধরে অসুস্থ ৷ যার মধ্যে আটদিন কলকাতার একটি নার্সিং-এ ভর্তি রয়েছি ৷ অপারেশনের পর পরেই আমি জানতে পারি, সন্দেশখালি নামক একটি জায়গায় তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতিকে তাড়া করেছিল জনতা ৷ কেউ বা কারা সেই অজিত মাইতির জায়গায় আমার ছবিকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমি আপনাদের জানিয়ে রাখি, প্রথমত আমি সন্দেশখালি কোনওদিন যাইনি এবং আমি কখনও দেখিনি।" তিনি আরও বলেন, "আমি কোনওদিন অঞ্চল সভাপতি ছিলাম না। আমি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলা সভাপতি ছিলাম ৷ বর্তমানে আমি বিধায়ক। আমি এলাকার পরিচিত মুখ। কেউ হয়তো ভ্রমবশত আমার ছবিকে ব্যবহার করেছে ওই সন্দেশখালির অজিত মাইতির জায়গায় অথবা কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।"
পিংলার বিধায়কের কথায়, "আমাকে যারা এলাকার লোক ভালোবাসেন সন্দেশখালির না, বরং পশ্চিম মেদিনীপুরে তাদের কাছে আমি দায়বদ্ধ। তাই যারা এই ধরনের খবর করছেন তাদের দোষারোপ করছি না ৷ ভ্রম সংশোধন করে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।" যদিও এই পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি কে দেখতে নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন সাংসদ দীপক অধিকারী সহ তৃণমূলের একগুচ্ছ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন
পার্থর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে সন্দেশখালির অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ, আশ্বাস মন্ত্রী পার্থর