মালদা, 26 ডিসেম্বর: পঞ্চায়েত সদস্য খুনে অভিযুক্ত ৷ গ্রেফতারির ভয়ে ফেরার ৷ আর তার কৃতকর্মের মাশুল গুনছেন সাধারাণ গ্রামবাসীরা ৷ এক বছরের বেশি সময় ধরে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে এলাকার উন্নয়ন ৷ আরও বড় সমস্যা, কোনও কাজে গ্রামের কারও সরকারি শংসাপত্রের প্রয়োজন পড়লে তা মিলছে না ৷ পঞ্চায়েত প্রধানও তাঁদের শংসাপত্র না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান ৷ ঘটনাটি রতুয়া ব্লকের মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৷
এলাকার বিধায়কও রাজ্যের শাসকদলেরই ৷ তিনি দাবি করছেন, এই ঘটনার কথা তাঁর জানাই ছিল না ৷ গ্রামবাসীরা গণস্বাক্ষর করে বিডিওকে গোটা ঘটনাটি জানিয়েছেন ৷ চিঠি গিয়েছে চাঁচলের মহকুমাশাসক, জেলাশাসক, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও ৷ কিন্তু সমস্যা মেটেনি ৷ কবে এই পরিস্থিতির বদল হবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সবাই ৷
এই বুথে রয়েছে বঙ্কুটোলা, বাজিতপুর ও বদনটোলা গ্রাম ৷ তিনটি গ্রাম মিলিয়ে হাজার খানেক মানুষের বাস ৷ 2023 সালের 29 নভেম্বর বঙ্কুটোলা গ্রামে খুনের ঘটনা ঘটে ৷ নিজের কাকাকে খুন করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামবিহারী যাদবের বিরুদ্ধে ৷ রতুয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় ৷ তারপর থেকেই তিনি পলাতক ৷ তাঁকে আর গ্রামে দেখা যায়নি ৷
বঙ্কুটোলা গ্রামের শিব যাদব বলেন, “এই বুথে তিন-চারটি গ্রাম রয়েছে ৷ কোনও গ্রামে রাস্তাঘাট ভালো নয় ৷ রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে প্রধানের কাছে যাচ্ছি ৷ পঞ্চায়েত সদস্য খুনে অভিযুক্ত ৷ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে ৷ সবাই তা জানে ৷ অথচ কোনও শংসাপত্র নিতে প্রধানের কাছে গেলে তিনি বলছেন, পঞ্চায়েত সদস্যের স্বাক্ষর নিয়ে যেতে হবে ৷ গত এক বছরের বেশি সময় আমরা কোনও উন্নয়ন কিংবা ত্রাণ কিছু পাইনি ৷ আমাদের ত্রাণ প্রধান কোথায় দিলেন, জানি না ৷ গোটা ঘটনা জানিয়ে আমরা প্রশাসনের সব জায়গায়, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছি ৷ কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি ৷”
মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মঞ্জু রায়ের দাবি, “মানুষজন সরকারি সবরকম সহায়তা পাচ্ছেন ৷ তাঁরা কোনও জিনিস থেকে বঞ্চিত নন ৷ চিঁড়ে, গুড়, ত্রিপল-সহ সমস্ত ত্রাণ সামগ্রী তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ কেউ প্রধানের শংসাপত্র নিতে পঞ্চায়েত দফতরে এলে তাঁকে তা দেওয়াও হচ্ছে ৷ গ্রামবাসীরা মিথ্যে কথা বলছেন ৷ তাঁরা সব পাচ্ছেন ৷” এলাকার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না ৷ আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি ৷”
তবে বিডিও রাকেশ টোপ্পো বলেন, “এর আগে গ্রামবাসীরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিলেন ৷ তখনই পঞ্চায়েত প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, পঞ্চায়েত সদস্যের অবর্তমানে গ্রামবাসীরা যেন সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত না হন ৷ এলাকার উন্নয়ন যেন সঠিকভাবে হয় ৷ আমি ফের পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলছি ৷ গ্রামবাসীদের সবরকম সাহায্য করার জন্য তাঁকে আবার নির্দেশ দেব ৷”