সন্দেশখালি, 11 ফেব্রুয়ারি: জনরোষে ফুঁসছে সন্দেশখালি ৷ এরই মধ্যে সন্দেশখালি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারকে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল ৷ দলের এই সিদ্ধান্তের পরেই বিরোধীদের প্রশ্ন, শিবু হাজরার বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হল না ? এমনকী শেখ শাহজাহান এখনও পলাতক ৷ তাঁর বিরুদ্ধেও কেন কোনও পদক্ষেপ নয় ?
এই বিষয়ে বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কে কাকে সাসপেন্ড করবে ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে কৃষকদের জন্য জমির আন্দোলন করেছিলেন ৷ জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেছিলেন ৷ আজ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল সন্দেশখালিতে জমির চরিত্র বদলে চাষযোগ্য জমিকে ভেড়ি বানিয়ে দিচ্ছে ৷ সন্দেশখালিতে স্কুলের ফুটবল মাঠও ভেড়ি হয়ে গিয়েছে ৷ ওখানে এখন সব জমি, ঘাটের মালিক শিবু হাজরা ৷"
পলাতক শেখ শাহজাহানের আরেক ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা ৷ তাঁর পরিচয় কী ? এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেন, "এরা সবাই সিপিআইএমের লোক, যারা তৃণমূল এসেছে ৷ পুলিশ যদি ওখানে আগ্রাসন চালায় তাহলে সব দ্বীপেই এই ঘটনা ঘটবে ৷ মুখ্যমন্ত্রী যে শওকত মোল্লাকে প্রশাসনিক সভায় প্রতিষ্ঠিত বোমাবাজ-দুর্নীতিবাজ বলে চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন ৷ তাঁকেই তিনি বিধায়ক বানিয়েছেন ৷ বিধায়ক হওয়ার পরে তিনি প্রকাশ্যে বলছেন বিজেপি নেতাদের খুন করব, মাথা ভাঙব ৷ আস্তে আস্তে প্রতিরোধ হবে আর এই প্রতিরোধ কোনও দলীয় পতাকা নিয়ে হবে না ৷ উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করলেই হবে না ৷ শেখ শাহজাহান কোথায় ? তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে ৷"
এদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মানছেন, কোনও কারণে কিছু মানুষের ক্ষোভ হয়েছে ৷ তবে তাঁর অভিযোগ, সিপিএম-বিজেপি রাজনৈতিক কারণে সেই ক্ষোভে মদত দিচ্ছে ৷ কুণাল বলেন, "পুলিশ বুঝিয়েছে ৷ তারপর 144 ধারা জারি করেছে ৷ আজ পরিস্থিতি শান্ত ৷ এরপর পুলিশ প্রশাসন যা করার করবে ৷ মানুষও ধীরে ধীরে বুঝতে পারবে সরকার সংবেদনশীল ৷ মানুষের ক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে রাজনীতি করেছে বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস ৷ বাম জমানায় কি মানুষ এরকম ঘটনা দেখেনি ? বা অন্য রাজ্যে কি এই ধরনের ঘটনা ঘটছে না ?"
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "ওই জায়গায় তৃণমূল ভোট পেলেও, অন্য কোনও দলের প্রার্থী কিছুটা বেশি ভোট পায় ৷ তারা সংগঠিত ভাবে এই গোলমালটাকে মদত দিয়েছে ৷ শুভেন্দু অধিকারী প্ররোচনা দিতে চাইছেন ৷ প্রচারে থাকতে চাইছেন ৷" অন্যদিকে সিপিআইএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূলের সাসপেনশনের আবার গুরুত্ব আছে নাকি ! আরাবুল ইসলামকেও তো সাসপেন্ড করা হয়েছিল ৷ সে ঘটনার ছয় বছর হয়েছে ? সেই আরাবুল ইসলামই তৃণমূলে প্রার্থী হয়েছে ৷ হামলা চালিয়েছে। ঠিক তেমনই উত্তম সর্দারকে সাসপেন্ড করে সেফ প্যাসেজ তৈরি করে দিয়েছে তৃণমূল ৷ যে উত্তম সরদার সন্ধ্যায় মহিলাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালাত ৷ ওটা কোনও সাসপেনশনই নয় ৷" সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত রিপোর্ট এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে এহেন কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: