জলপাইগুড়ি, 19 জুন: আগুনে নিশ্চিহ্ন হয়েছে হলং বাংলো ৷ ডুয়ার্সের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের পর্যটনে অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ঐতিহ্যবাহী হলং বন বাংলোটি একাধিক স্মৃতি বিজরিত । ভ্রমণ পিপাষুরা এই বাংলোর বুকিং পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন ৷ দাম চড়া হলেও পর্যটকরা এই বাংলোতে রাত কাটাতে বেশি পছন্দ করেন।
এই বাংলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, এর সামনে একটা বড় বন্যপ্রাণীদের খাবারের জায়গা করা আছে । সেখানে হাতি, গন্ডার, বাইসন-সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা খেতে আসে। ফলে পর্যটকরা খুব সামনে থেকেই বন্যপ্রাণীদের দেখতে পারেন । মঙ্গলবার 18 জুন রাতেই ভষ্মীভূত হয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই বাংলো যা বাংলার পর্যটনের ক্ষেত্রে একটা কালো দিন বলে মনে করছে পর্যটক থেকে এর সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী মহল ৷
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, "পর্যটন ব্যবসায়ীদের কাছে এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ৷ কী ভাবে ঘটল তা বলতে পারছি না ৷ পর্যটক থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীদের অনেক বড় ক্ষতি গেল । ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি ৷" তিনি আরও উল্লেখ করেন, ডুয়ার্সের গর্ব ঐতিহ্যবাহী জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের অংশ এই হলং বন বাংলো । তিনমাস পর সেপ্টেম্বরে জঙ্গল খুললেই পর্যটকরা হলং বাংলো বুকিং করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন । এই বাংলো জলদাপাড়ার পর্যটন শিল্পের মুকুটে একটা পালক যা ঝড়ে গেল । কবে ঠিক হবে জানা নেই বলে আক্ষেপ পর্যটক থেকে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকের ।
সাধারণত, 16 জুন থেকে 15 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সমস্ত জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্যগুলি বন্ধ থাকে । বন্যপ্রাণীদের প্রজনন ঋতু হওয়ায় সরকারি বন বাংলোগুলি বন্ধ রাখা হয় ৷ 15 সেপ্টেম্বরের পরে ফের বাংলোগুলি বুকিং নিতে শুরু করে সরকার । জলদাপাড়া জঙ্গল সাফারির ক্ষেত্রেও পর্যটকদের কাছে হলং বাংলোর চাহিদা তুঙ্গে থাকে । তবে হঠাৎ করে বাংলোটি পুড়ে যাবার ফলে হতাশ পর্যটক থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীরা । প্রতিবছর হলং বাংলোকে কেন্দ্র করে বড় অঙ্কের উপার্জন হয়ে থাকে পর্যটন ব্যবসায়ীদের । দক্ষিণবঙ্গের এক ভ্রমণ পিপাষু সৌমিত্র ঘোষ বলেন, " অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল । ডুয়ার্সে গেলে হলং বাংলো ছাড়া মন ভরে না। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল । কীভাবে এমন হল তদন্ত হওয়া উচিত ।"