শিলিগুড়ি, 22 অক্টোবর: কেটে গিয়েছে 372 ঘণ্টা ৷ অবশেষে অনশন প্রত্যাহার করলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ মণ্ডল ৷ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহার হাতে জুস খেয়ে অনশন ভঙ্গ করেন সন্দীপ ৷ তবে শারীরিক অবস্থা ভালো নেই তাঁর ৷ তাই অনশন মঞ্চ থেকে সরাসরি হাসপাতালের সিসিইউতে মনিটরিংয়ের জন্য ভর্তি করা হয় তাঁকে ৷
অনশন ভেঙেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন জুনিয়র চিকিৎসক সন্দীপ মণ্ডল ৷ তিনি বলেন, "জয় যে পুরোপুরি হয়েছে সেটা বলা যাবে না । নির্যাচিতার বাবা-মায়ের আবেদনে আমরা এই অনশন প্রত্যাহার করছি । তবে এটা স্পষ্ট, সরকার আমাদের সঙ্গেও নেই, সাধারণ মানুষের সঙ্গেও নেই । সিবিআই তদন্ত যদি সেভাবে না এগোয়, তবে আমাদের চাপ সৃষ্টি করতে হবে ।"
সোমবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৈঠকের পর তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন আরজি করে নির্যাতিত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবা ৷ অনুরোধ করেন অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য ৷ সেই অনুরোধ ও জনগণের ইচ্ছায় 17 তম দিনে অনশন প্রত্যাহার করেন জুনিয়ার ডাক্তাররা । সেই সঙ্গে, মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে ডাকা স্বাস্থ্য ধর্মঘটেরও প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা । মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে ধর্মতলায় নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর এমনটাই জানান জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
নিজেদের 10 দফা দাবি নিয়ে গত 5 অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় 'আমরণ অনশন' শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । কলকাতার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও শুরু হয় অনশন । প্রথমে জুনিয়র চিকিৎসক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অলোক কুমার বার্মা অনশনে বসেন । অলোক বার্মা অসুস্থ হয়ে পরায় তাঁকে হাসপাতালের হাইব্রিড সিসিইউতে ভর্তি করা হয় । তাঁর জায়গায় অনশনে বসেন সন্দীপ মণ্ডল । এরপর টানা 3 দিন অনশন চালিয়ে যান শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সন্দীপ মণ্ডল ৷
কিন্তু, পরবর্তীতে শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে ৷ তাঁকে আইসিসিইউ-তে ভর্তি করা হয় । অবশেষে নিজেদের 10 দফা দাবি পূরণের জন্য লড়াই একা চালিয়ে যান সন্দীপ মণ্ডল । শেষে সোমবার রাতে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা হয় তাঁর ৷ এরপর অনশন প্রত্যাহার করেন তিনি । কলেজের অধ্যক্ষইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, "সন্দীপ অনশন প্রত্যাহার করায় আমি খুশি হয়েছি ৷ আন্দোলনের রূপরেখা কী হবে, সেটা পরের বিষয় । কিন্তু, একজন অভিভাবক হয়ে এই অনশনের প্রথম দিন থেকেই আমি উদ্বেগে ছিলাম । অনশন আজ বন্ধ হওয়ায় আমি খুশি ।"