শিলিগুড়ি, 7 অগস্ট: গত তিনটি লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ে জয় পেয়েছে বিজেপি ৷ তারপরেও পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের দাবি পূরণ না-হওয়ায় ক্রমশ বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ৷ বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবে বিজেপির সমর্থনের পর গেরুয়া শিবিরের ওপর কোনও ভরসা রাখতে পারছে না জোট শরিকরা ৷ এমনটাই চর্চা শুরু হয়েছে শৈলরানির রাজনীতিতে।
ইতিমধ্যে জিএনএলএফ (Gorkha National Liberation Front) বিজেপিকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। 2025 সালের 5 এপ্রিলের মধ্যে পৃথক রাজ্য অথবা স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে ৷ কেন্দ্র সরকারকে এ নিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছেন জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিং। একই ইস্যুতে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে উঠল গোর্খাল্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট সমূহ ৷ বিজেপিকে ভোট দেওয়া তাদের ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছে দলটি ৷ এমনটাই জানিয়েছেন সংগঠনের আহ্বায়ক কিশোর প্রধান। তিনি বলেন, "আর কোনও রাজনৈতিক দলের উপর আমাদের বিশ্বাস নেই। এবার রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় নয়, গণতান্ত্রিকভাবে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মসূচি শুরু হবে।"
কিশোর প্রধান বলেন, "বিজেপিকে প্রচুর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও কাজ করছে না। রাজু বিস্তা পাহাড়ে একরকম কথা বলে, আর দিল্লিতে আরেকরকম। আমরা চেয়েছিলাম পৃথক রাজ্য ৷ কিন্তু তারা বিধানসভাতে তৃণমূলের আনা প্রস্তাবে সায় দিল। তাতেই পরিষ্কার, বিজেপিও বাংলা ভাগ চায় না। কিন্তু, দাবি থেকে আমরা পিছু হটছি না। আমাদের দাবি পূরণের জন্য এবার অরাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। কারণ আমরা আইন মেনেই পৃথক রাজ্য চেয়েছি। আমাদের আর কারও সহযোগিতা লাগবে না।"
সোমবার বিধানসভাতে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেছিলেন শাসকদলের বিধায়করা ৷ তাকে সর্মথন করে বিজেপিও। এরপরেই পাহাড় আরও ক্ষিপ্ত বিজেপির উপর ৷ পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখেই পরপর তিনটি লোকসভাতে বিজেপিকে সমর্থন করেছে জিএনএলএফ, মোর্চা-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ৷ অভিযোগ, প্রতিবার বিজেপি গোর্খাল্যান্ডের কথা বলেই ভোটে জেতে ৷ তারপর সব ভুলে যায়। পাহাড়ের বিজেপি বিধায়করাও এখন দলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। বিধায়ক নীরজ জিম্বা, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা সকলেই গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে লড়াই চালাচ্ছেন। কিন্তু বিধানসভায় তাঁদের সামনেই দল জানিয়ে দিয়েছে, তারা বঙ্গভঙ্গের বিপক্ষে।