কলকাতা, 3 অগস্ট: হালকা বৃষ্টিতেই জল থৈথৈ মহানগরের পথ ঘাট থেকে অলিগলি ৷ সেই ছবি দেখাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছিল নগরবাসীর কাছে ৷ গত দু'দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির পরেও জল নেই সেই রাস্তা, গলি ৷ কলকাতার শহরতলি ভিআইপি রোড, কলেজ মোড়, সেক্টর ফাইভ, বিধান নগরের একাংশ জলমগ্ন ৷ তখন কলকাতা পুরনিগম এলাকার ওয়াটার পকেট হিসেবে চিহ্নিত বড়বাজার, মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট, কলুটোলা স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট এমনকী স্ট্র্যান্ড রোডও শুকনো ৷
কলকাতায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল 218 মিলি মিটারের বেশি ৷ সেখানে শনিবার ভোর 4টে থেকে সকাল 6টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 560 মিলিমিটার ৷ গতকাল অঝোরে বৃষ্টির পর আজ ভোর থেকে ভালো বৃষ্টি হয়েছে ৷ বড় রাস্তাগুলির সঙ্গে অলিগলিতে সামান্য জল জমলেও তা দ্রুত নেমে গিয়েছে ৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "কাল যে জল জমবে না, এই গ্যারান্টি আমিও দিচ্ছি না ৷ মেয়র পারিষদ তারক সিং এবং নিকাশি দফতর, এরা এত ভালো কাজ করেছে, যে সাধারণ জল বেরিয়ে যাচ্ছে ৷ কয়েকটা জায়গা যেমন পাতিপুকুর, বেহালায় যেখানে কাজ চলছে, 127 ও 114 নম্বর ওয়ার্ডে আছে ৷ কিন্তু সার্বিক যে জল জমার পরিস্থিতি, তা অন্যবারের তুলনায় অনেকটা ভালো ৷"
কলকাতা পুরনিগম ও দক্ষিণ দমদমে মিউনিসিপ্যালিটি সীমানা পতিপুকুর আন্ডার পাসের ছবি অবশ্য অন্য বর্ষার মতোই জলমগ্ন ৷ তবে জলের পরিমাণ অন্যান্য বারের তুলনায় কম ৷ কাঁকুড়গাছি রেল ব্রিজের তলায় বেশ খানিক জল জমে আছে ৷ পিটিএসের সামনে জল থাকলেও ধীরে ধীরে নেমে গিয়েছে ৷
কলকাতা পুরনিগমের সংযুক্ত এলাকা বেহালা ও জোকার কিছু অংশে সামান্য জল জমে আছে ৷ এখনও বৃষ্টি পড়ছে ৷ ফলে সার্বিক ভাবে কলকাতার জলছবির যে বদল হয়েছে, সেটা বললে ভুল হয় না ৷ এবার তৎপর পুরনিগমের নিকাশি বিভাগও ৷ গলফ গ্রিন-সহ বেশ কিছু এলাকা, যেখানে জল দাঁড়িয়ে ছিল ৷ সেখানে পোর্টেবল পাম্প চালিয়ে এলাকার জল নামানোর কাজ করেছে পুরনিগম ৷
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে খবর, শনিবার ভোর 4টে থেকে সকাল 6টা পর্যন্ত পামার বাজারে 41.6 মিলিমিটার, ঠনঠনিয়া 24 মিলিমিটার, কুলিয়া ট্যাংরা 32 মিলিমিটার, পাগলা ডাঙ্গা 21.4 মিলিমিটার, চিংড়িঘাটা 49 মিলিমিটার, মানিকতলা 33 মিলিমিটার, দত্তবাগান 32 মিলিমিটার ৷ বীরপাড়া 27 মিলিমিটার, মার্কাস স্কোয়ার 15 মিলিমিটার, ধাপ 24 মিলিমিটার, তপসিয়া 35 মিলিমিটার, উল্টোডাঙা 42 মিলিমিটার, কামদহরি 12 মিলিমিটার, পাটুলি 11 মিলিমিটার ও বালিগঞ্জ 36 মিলিমিটার, মোমিনপুর 14 মিলিমিটার, চেতলা 26 মিলিমিটার, যোধপুর 26 মিলিমিটার, কালীঘাট 21 মিলিমিটার, জোকা 19 মিলিমিটার, গার্ডেনরিচ 9 মিলিমিটার ৷
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা লাগাতার নিকাশি লাইনে পলি তোলার কাজ করেছি । বিভিন্ন জায়গায় প্রায় 400 বেশি পোর্টেবল পাম্প আছে ৷ ভাটা আসতেই লকগেট খুলে দিয়েছি ৷ ফলে শহরের সিংহভাগ জায়গায় জল জমেনি ৷ বেশ কিছু অংশে জল জমলেও সেটা দ্রুত নেমে গিয়েছে।"