নিমতা, 30 জুন: ফের শুটআউট! বেলঘরিয়ার পর এবার নিমতা ৷ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক তৃণমূল কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ৷ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাড়ির সামনেই লুটিয়ে পড়েন শেখ হাফিজুল রহমান নামে ওই তৃণমূল কর্মী। তাঁর পেটে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এর নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক কারণ আছে, নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷
গুলি চালানোর ঘটনায় শনিবার রাতে উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর দমদম পৌরসভার 34 নম্বর ওয়ার্ডের ফতুল্লাপুর এলাকায় ৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন গুলিবিদ্ধ হাফিজুল। কী কারণে ওই তৃণমূল কর্মীকে গুলি করা হল, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে ৷
ঘটনার নেপথ্যে ব্যাক্তিগত কোনও শত্রুতা থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর 52-র হাফিজুল মাছের ব্যবসা করেন ৷ সেই সঙ্গে, তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন তিনি ৷ শনিবার রাতে তাঁকে বাড়িতে ডাকতে যায় ফারুক আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ৷ তিনি হাফিজুলের প্রতিবেশী বলেই জানা গিয়েছে ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর দু'জনের মধ্যে তুমুল বচসা বাধে ৷ হাতাহাতি হয় বলেও অভিযোগ ৷ সেই সময় হঠাৎ ফারুক পকেট থেকে একটি রিভলবার বের করে সটান গুলি চালিয়ে দেন হাফিজুলকে লক্ষ্য করে ৷ গুলির আওয়াজ শুনে হাফিজুলের স্ত্রী বাইরে বেরিয়ে দেখেন, তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে বাড়ির গেটের সামনে ৷ আর হাতে রিভলবার নিয়ে দাঁড়িয়ে ফারুক।
এই দৃশ্য দেখে অভিযুক্তের হাত থেকে রিভলবার কেড়ে নেন হাফিজুলের স্ত্রী ৷ ততক্ষণে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে যায় ৷ অভিযুক্ত ফারুককে হাতেনাতে ধরে আটকে রাখে স্থানীয়রাই ৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে।
অন্যদিকে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তৃণমূল কর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। পরে, অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ৷ সেখানেই আপাতত চিকিৎসা চলছে তাঁর। তবে, ওই তৃণমূল কর্মীর শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট সঙ্কটজনক বলেই খবর হাসপাতাল সূত্রে।
এই বিষয়ে হাজিজুলের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান বলেন, "রাত সাড়ে 10টা নাগাদ ফারুক এসে ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায় ৷ বাইরে যেতেই সে গুলি চালিয়ে দেয় ৷ কী কারণে গুলি করা হল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। অভিযুক্তের কড়া শাস্তি হোক সেটাই চাই।" অভিযুক্ত ফারুককে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত গ্রেফতার করেছে নিমতা থানার পুলিশ ৷ ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 324, 326, 341, 307 এবং অস্ত্র আইনেও মামলা রুজু হয়েছে ৷ ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ৷