হাড়োয়া (উত্তর 24 পরগনা), 11 নভেম্বর: সিপিএম-কে কটাক্ষ করতে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন অশোকনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী । নৈহাটি এবং হাড়োয়োর উপনির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়া নিয়ে রাজ্যের বাম নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "সিপিএম-এর বংশ, নির্বংশ হয়ে গিয়েছে ৷ ওদের বংশে বাতি দেওয়ার কেউ নেই । দুটি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো একজন লোকও পেল না ? এই তো অবস্থা লাল ঝান্ডার ।" তৃণমূলের বিধায়কের এই মন্তব্যের পরই জল্পনা শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে ৷ পাল্টা জবাব দিতে আসরে নামে সিপিএমও ৷
রবিবার সন্ধ্যায় হাড়োয়া বিধানসভার প্রার্থী শেখ রবিউলের সমর্থনে ফলতি-বেলিয়াঘাটা অঞ্চলে একটি জনসভার আয়োজন করে তৃণমূল ৷ সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী-সহ রাজ্যের দুই মন্ত্রী রথীন ঘোষ ও সুজিত বসু ৷ সেখানে সিপিএম-এর প্রার্থী না-দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেন তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদের সভাপতি নারায়ণ গোস্বামী ৷
তিনি বলেন, "ফলতি-বেলিয়াঘাটা অঞ্চল একসময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল । তখন বেতাজ বাদশা ছিলেন মজিদ মাস্টার । 2006 সাল থেকে টানা তিন বছরেরও বেশি সময় মাটি কামড়ে তাঁর বিরুদ্ধে এখানে আমরা লড়াই করেছি । হাড়োয়া কেন্দ্রে প্রায় তিন লক্ষের কাছাকাছি ভোটার । সিপিএম দাবি করে, তারা নাকি রেজিমেন্ট পার্টি ! অথচ, সেই পার্টির প্রার্থী দেওয়ার লোক নেই ? ভাবুন, কী অবস্থা ! সিপিএমের লাল পতাকা যত না দেখা যায়, তার চেয়ে বেশি লাল শালু দেখা যায় বিরিয়ানির দোকানে ৷ কারণ, বিরিয়ানির হাঁড়ি বাঁধতে বেশি ব্যবহার হচ্ছে এই লাল কাপড়ের ।"
আরজি কর কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনেও সিপিএম-কে খোঁচা দেন নারায়ণ গোস্বামী । তাঁর কথায়, "পিছন থেকে আরজি কর কাণ্ডে আন্দোলনের রিমোট কন্ট্রোল যাদের হাতে রয়েছে, তাদের দলে একজনও সিপিএম করার মতো লোক নেই ? এতেই বোঝা যায় সিপিএম পার্টির কী দুরবস্থা ! আমি দুটি কেন্দ্রেই প্রচারে গিয়েছিলাম । কিন্তু কোথায়ও সিপিএমের প্রার্থী খুঁজে পাইনি ।"
এদিকে, তৃণমূল বিধায়কের এমন বিতর্কিত মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে আসরে নামে সিপিএম ৷ তৃণমূল বিধায়কের রুচিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাম নেতৃত্ব ৷ সিপিএম-এর উত্তর 24 পরগনা জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও হাড়োয়া উপনির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমেদ আলি খান বলেন, "তৃণমূল দলে অভদ্র লোকের সংখ্যা ভরে গিয়েছে । সেই কারণে এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করতে পেরেছেন ৷ ওঁনাকে বলব, পশ্চিমবঙ্গেই কেবলমাত্র তৃণমূলের পতাকা দেখতে পাওয়া যাবে । কিন্তু, লাল ঝান্ডা সমাদৃত গোটা বিশ্বে । কারণ, বহু শহিদের লড়াই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে এই লাল ঝান্ডা । তাই, তাকে এত তাড়াতাড়ি শেষ করা যাবে না ।"
অন্যদিকে, পরে নিজের বক্তব্যের ব্যাখা দিতে গিয়ে নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "আসলে আমি আগেও বলেছি, সিপিএমের পার্টি অফিস আছে ঠিকই !কিন্তু, তা খোলা হয় না । ফলে জং ধরে গিয়েছে বহু জিনিসে । তাই, এখন সেসব খুলে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করার সময় এসে গিয়েছে । তাতে হয়তো কিছু দাম পাবে । এরপর সেটাও পাবেনা সিপিএম নেতারা ।"