মালদা, 5 নভেম্বর: মাত্র তিন মাস হয়েছিল বিয়ের ৷ তাও আবার মাত্র 16 বছর বয়সে ! বিয়ের তিন মাসের মাথায় নাবালিকা ওই বধূর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে মালদার কালিয়াচকে ৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে ৷ ঘটনায় মৃতার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকে ৷ মৃত কিশোরীর সঙ্গে লাফফো টাউন এলাকার যুবক আদনান শেখের বিয়ে হয়েছিল ৷ আদনান পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আদনানের আগেও একটা বিয়ে হয়েছিল ৷ কিন্তু, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় ৷ দ্বিতীয়বারে এক নাবালিকাকে বিয়ে করেন অভিযুক্ত ৷ নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর নানা অছিলায় তার সঙ্গে অশান্তি করতেন আদনান ৷ কথা না-শুনলে মারধর করা হত ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল 10টা বেজে গেলেও ঘুম থেকে ওঠেনি সে ৷ শ্বশুর বাড়ির লোকজন ঘুম ভাঙাতে ঘরে ঢুকে তাঁকে ধাক্কা দিতে শুরু করেন ৷ কিন্তু, তাতেও তার ঘুম ভাঙেনি ৷ এরপরেই বাড়ির লোকজনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা সেখানে চলে আসেন ৷ খবর দেওয়া হয় কালিয়াচক থানায় ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাবালিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানেই চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন ৷
মৃত নাবালিকা গৃহবধূর মায়ের অভিযোগ, "মাত্র তিন মাস হল মেয়ের বিয়ে হয়েছে ৷ বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই জামাই অশান্তি শুরু করেছিল ৷ কিন্তু, কী কারণে অশান্তি, মেয়ে কখনও আমাদের বলেনি ৷ ওকে মারধরও করত আদনান ৷ ক’দিন আগে মেয়ে বাড়িতে এসেছিল ৷ ও শ্বশুরবাড়িতে আর ফিরতে চাইছিল না ৷ গত পরশু শাশুড়ি-ননদরা এসে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় ৷ আজ মেয়ের শাশুড়ি আমাকে ফোন করে ওদের বাড়ি আসতে বলে ৷"
তিনি অভিযোগ করেন, "ওর শাশুড়ি আমাকে বলেন, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ৷ আমি গিয়ে দেখি, মেয়ে শেষ ৷ মেয়ে কখন মারা গিয়েছে, কেউ আমাকে বলেনি ৷ আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে ৷ আমি দোষীদের শাস্তি চাই ৷"
এই ঘটনায় আদনান এবং তাঁর বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে কালিয়াচক থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ কালিয়াচক থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "এক বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে ৷ তদন্ত শুরু হয়েছে ৷"