রায়গঞ্জ, 8 অগস্ট: 'বাড়ির কেউ যদি চলে গেলে যেমন মনে হয় তেমনই বোধ মনে হয়েছিল।' প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে স্মৃতিচারণায় এমনই বললেন এক সময়ের বুদ্ধদেবের মন্ত্রিসভার সতীর্থ শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় ৷
বৃহস্পতিবার স্মৃতিচারণায় শ্রীকুমার মুখোপাধ্য়ায় বলেন, "আমার পরিবারে স্ত্রী ও আমার দুই মেয়ে বুদ্ধবাবুকে মনে করতেন বড় জেঠু ৷ কারণ আমার তো কোনও দাদা নেই ৷ আমার মেয়ের বিয়েতেও তিনি এসেছিলেন ৷ কিছু বলার নেই, আজকে যখন খবরটি পেলাম তখন মনে হল বাড়ির কেউ চলে গেলেন ৷" শোক বিহ্বল প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভাট্টাচার্য। রায়গঞ্জের বাসিন্দা শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় বাম আমলে বুদ্ধদেব ভাট্টাচার্যের মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন।
খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তাঁর সান্নিধ্যও লাভ করেছিলেন। আজ বুদ্ধবাবুর প্রয়াণে চোখে জল শ্রীকুমারের। কথা বলতে গিয়ে বারবার বুজে এসেছে গলা। ইটিভি ভারতে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "বুদ্ধদেব ভাট্টাচার্যের মতো এমন মানুষ পৃথিবীতে মেলা কঠিন। তিনি যেন ঘরের মানুষ ছিলেন। তিনি চলে গিয়েছেন এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। অগ্রজ চলে গেল এই অনুভূতিই হচ্ছে বারে বারে।" তাঁর পরামর্শ, ভালেবাসা, বকা-ঝকা সবকিছু পরিপূর্ণ মন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে বলে জানালেন শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, "2000 সাল থেকে শুরু করে 2011 সাল পর্যন্ত ওনার মন্ত্রিসভাতে ছিলাম। বুদ্ধবাবুর সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যাকে তিনি বিশ্বাস করতে তাঁকে বিশ্বাসই করতেন আর তাঁকে সেভাবেই দ্বায়িত্বও দিতেন বুদ্ধবাবু।"
শ্রীকুমারবাবু বলেন, "বুদ্ধবাবু ছোটবেলার থেকে এনসিসি করতে। তিনি বারবার করে বলতেন আমি এনসিসি ক্যাডেট ছিলাম। পরে বুদ্ধবাবু এনসিসির দায়িত্বটা আমার দফতরেই দিয়েছিলেন। আমার বড় মেয়ের বিয়েতে তিনি ঘন্টাখানেক সময় আড্ডা দিয়েছিলেন। বকফুলের বড়া খুব পছন্দ করতেন ৷ এটা আমার একটা বড় পাওনা যে তিনি আমার মেয়ের বিয়েতে এসেছিলেন।" অন্যদিকে শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, "যখন আমি বিপদে পড়েছিলাম আমার স্ত্রীকে কলেজের মধ্যে মারধর করেছিল সেই সময় প্রথম ফোনটি বুদ্ধদেববাবুই আমাকে করেছিলেন ৷ সে সময় আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না, আর বুদ্ধদেববাবু মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না ৷ কিন্তু দাদা তো দাদাই থাকেন ৷"