কলকাতা, 26 জুলাই: পুরসভায় 1818 চাকরি বিলিয়ে 200 কোটি টাকারও বেশি মুনাফা করেছেন অয়ন শীল ৷ পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বর্তমানে সংশোধনাগারে বন্দি থাকা অভিযুক্ত অয়নকে জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল সিবিআই ।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি পুরসভায় যে দেদার নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা । সম্প্রতি অয়ন শীলের বিরুদ্ধে কলকাতায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, গত 2014 সাল থেকে রাজ্যের প্রায় 19টি পুরসভায় মোট 3650টি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল । পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রায় 1818 নিয়োগই ছিল একেবারে ভুয়ো । বেআইনি ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় । মদতে ছিলেন অয়ন শীল ও তাঁর অনুগামীরা ।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, তারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি বিস্তারিত ভাবে খতিয়ে দেখছে । সেখানে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে । অভিযোগ, অয়ন শীলের সংস্থার মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে । সিবিআইয়ের দাবি, অয়ন শীলকে জেরা করে এই বিস্তৃত তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা ।
রাজ্যের একাধিক জায়গায় গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া নথিপত্র ও পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে, উত্তর 24 পরগনা জেলার বাদুড়িয়া পুরসভায় 34টি, কাঁচরাপাড়ায় 49টি, দমদমে 61টি, দক্ষিণ দমদমে 329টি, উত্তর দমদমে 64টি, বরানগরে 276টি, হালিশহরে 39টি, কামারহাটিতে 303টি, নিউ বারাকপুরে 74টি, টিটাগড়ে 221টি, রানাঘাটে 101টি, নদিয়া জেলার নবদ্বীপে একটি, বীরনগরে 26টি, কৃষ্ণনগরে 200টি, দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারে 18টি, হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়ায় 18 নিয়োগ হয়েছিল । এই নিয়োগের সময়ের ব্যবধান 2014 সাল থেকে 2019 সালের মধ্যে বলে জানতে পেরেছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা ।
অভিযোগ, এই সব নিয়োগই পুরোপুরি বেআইনি । আর এই বেআইনি নিয়োগের মাথায় ছিলেন অয়ন শীল নিজেই । সিবিআইয়ের তরফে মনে করা হচ্ছে, এই ভাবে অয়ন বাজার থেকে প্রায় 200 কোটি টাকারও বেশি টাকা তুলেছিলেন । এখন প্রশ্ন, এই বিপুল পরিমাণ টাকা অয়ন কোন কোন প্রভাবশালীদের কাছে পাঠিয়েছিলেন ।