লাভপুর, 4 অগস্ট: লাভপুরে কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত 6টির বেশি গ্রাম ৷ জলের তোড়ে প্রায় 100 মিটার নদী বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকছে লোকালয়ে ৷ ফলে ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক কাঁচা বাড়ি ৷ বিস্তীর্ণ চাষের জমি-সহ ফসল জলের তলায় ৷ বৃহস্পতিবার রাতভর টানা বৃষ্টিতে নাজেহাল পরিস্থিতি বোলপুর ও লাভপুরের ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা বৈঠক করেন ।
বৃহস্পতিবার রাতভর টানা মুষলধারে বৃষ্টি হয় ৷ বীরভূম জেলার মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টি হয় বোলপুরে ৷ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল 202.6 মিলিমিটার । তারপরেই লাভপুরে বৃষ্টি হয় 200 মিলিমিটার । আর এতেই ফুঁসতে থাকে অজয় নদ ও কোপাই নদী ৷ কোপাই নদী প্লাবিত হয়ে ডুবে গিয়েছিল গোয়ালপাড়া সেতু । বর্তমানে সেই জল কমেছে ৷ শুরু হয়েছে সেতু দিয়ে পারাপার ৷ সতীপীঠের অন্যতম কংকালীতলা মন্দির দিয়ে কোপাই নদীর জল বইতে শুরু করেছিল ৷ সেই জলও কমে গিয়েছে ।
উল্লেখ্য, এই কোপাই নদীই লাভপুরে ঢোকার আগে নাম হচ্ছে কুয়ে নদী ৷ অর্থাৎ, বোলপুর-শান্তিনিকেতন থাকে সমস্ত প্লাবিত জল বইতে শুরু করে লাভপুরের দিকে ৷ তাই বৃষ্টির তিনদিন পর লাভপুরে কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে যায় ৷ লাভপুরের ঠিবা গ্রামের তালতলার কাছে জলের তোড়ে প্রায় 100 মিটার নদী বাঁধও ভেঙে যায় ৷ আর সেখান দিয়ে হু হু করে লোকালয়ে জল ঢুকতে শুরু করে ৷ ফলে ঠিবা সহ জয়চন্দ্রপুর, হরিপুর, চতুর্ভুজপুর, কাঁদরকুলো, খাঁপুর প্রভৃতি গ্রাম প্লাবিত হয়ে যায় ৷ প্রচুর কাঁচা বাড়ি ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত, ভেঙে যায় একাধিক গোয়ালঘর, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষের জমি ফসল-সহ একেবারে জলের তলায় ।
লাভপুর শহরের সঙ্গে এই গ্রামগুলির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে । বড় বড় লোহার কড়াইয়ে চড়ে যাতাযাত করছে কিছু মানুষ ৷ সব মিলিয়ে কুয়ে নদী প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লাভপুরের গ্রামগুলি ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ইতিমধ্যেই বিডিও অফিস ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির তরফে ত্রিপল বিতরণ শুরু হয়েছে । এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সে জেলার প্রশাসনিক কর্তা -ব্যক্তিরা বৈঠক শুরু করেছেন ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যুর কোন খবর নেই ৷ আর তাতেই কিছুটা স্বস্তি সকলের ৷
প্রসঙ্গত, তিনবছর বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি ৷ তাই জেলার নদ-নদীগুলি শুষ্কই ছিল । এবার অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত বোলপুর-শান্তিনিকেতন-সহ লাভপুর ।