দুর্গাপুর, 31 মে: ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ তথা কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জের ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এবার প্রতিবাদ মিছিলে সামিল দুর্গাপুরের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বিভিন্ন সনাতনী সংগঠন ৷ শুক্রবার দুর্গাপুরের পাঁচমাথা মোড় এই প্রতিবাদ মিছিলটি শুরু হয় ৷ তবে মিছিল থেকে বারবার জয় শ্রী রাম ধ্বনি শোনা যায় তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এদিনের কর্মসূচি সম্পর্কে ভারত সেবাশ্রম সংঘের দুর্গাপুর শাখার সম্পাদক স্বামী আত্মস্থনন্দজি মহারাজ বলেন, " সনাতন ধর্মকে বারবার অপমান করা হচ্ছে । যে ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেই আমদের প্রতিবাদ। এই মিছিলে ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ হিন্দু সনাতন ধর্মের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন অংশ নিয়েছে। আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে । আমরা সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে । কিন্তু তিনি ক্ষমা চাননি । তাই আমাদের এই আন্দোলন চলবে ৷"
এদিন শাঁখ বাজিয়ে মিছিলের শুরু হয় ৷ দুর্গাপুরের পাঁচমাথা মোড় থেকে ভিড়িঙ্গি মোড় পর্যন্ত চলে সাধুদের এই প্রতিবাদ মিছিল ৷ তবে মিছিল থেকে কেন শুধুমাত্র 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ এই ব্যাপারে অবশ্য কোনও সংগঠনের তরফে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলার কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, "মিছিলে ধর্মীয় সংগঠনের কোনও সদস্য ছিলেন কি না তা নিয়েও আমাদের সন্দেহ আছে। নেপথ্যে থেকে বিজেপি ধর্মীয় বিভাজনের নোংরা খেলা খেলছে। রাজ্যকে অশান্ত করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে চাইছে।"
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে তৃণমূলের এজেন্ট না বসতে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন ৷ এমনকী, মুর্শিদাবাদে হিংসা ছড়ানোর পিছনেও কার্তিক মহারাজকেই দায়ী করেন তিনি ৷ সেই কথার জেরে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য তথা দেশ ৷ ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সাধু মহলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে হবে ৷ এই দাবি জানিয়ে আইনি নোটিশও পাঠান কার্তিক মহারাজ। ঘটনায় সোচ্চার হন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ৷ বিভিন্ন নির্বাচনী সভা থেকে এই বিষয়টি উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন তিনি ।