বনগাঁ, 23 জুন: বারাসত, অশোকনগরের পর এবার বনগাঁয় গণপিটুনির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার রাতে বনগাঁ পৌরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরপল্লীতে এক ভবঘুরেকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে রবিবার সকালে গাইঘাটা থানার বেড়িপোপালপুর এলাকায় এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । পুলিশ তাঁকেও উদ্ধার করেছে ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ছেলেটি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। স্থানীয়দের দাবি, শনিবার রাতে ঠাকুরপল্লী এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন এক ভবঘুরে । মুখে মুখে চাউড় হয় ছেলেধরা ধরা পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ভিড় জমে যায়। অভিযোগ, ভিড়ের মধ্য থেকে কয়েকজন তাঁকে মারধোর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনগাঁ থানার পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতে ভর্তি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ । রবিবার তাঁদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠালে বিচারক আগামি 26 তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, রবিবার সকালে ছেলেধরা সন্দেহে গাইঘাটার বেড়িগোপালপুর একালায় এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, দিন কয়েক ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন কয়েকজন যুবক। অভিযোগ, এদিন সকালে বেড়িগোপালপুর বাজারে এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢোকে পাঞ্জাবি পড়া যুবক । পরিবারের সদস্যদের দাবি, বাড়ি ঢুকে তাঁর মেয়েকে নাকি ইসারায় ডাকছিলেন ওই যুবক। এই ঘটনায় মেয়েটি জ্ঞান হারায় বলে জানায় এলাকার লোকজন । এরপর চিৎকার-চেঁচামেঁচিতে ওই যুবক পালাতে গেলে পাড়ার লোক ও বাড়ির লোকজন ধরে ফেলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ৷ এরপর সঠিক উত্তর দিতে না পারায় গণধোলাই দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ খবর পেয়ে গাইঘাটা থানার পুলিশ এসে যুবককে উদ্ধার করে।
বনগাঁ পৌরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বন্ধনা দাস কীর্তনীয়া বলেন, "রাতে আমি এই ঘটনা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত যুবককে উদ্ধার করে বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে মারধর করা, আইন হাতে নেওয়া উচিত নয় ৷ সাধারণ মানুষকে বলব, গুজবে কান দেবেন না। এই ধরনের কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশ প্রশাসনকে খবর দিন । আইন হাতে তুলে নেবেন না।"