গুসকরা, 2 নভেম্বর: পুজো করতে গিয়ে এক গৃহস্থের নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল পুরোহিতের বিরুদ্ধে। যার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় ৷ ওই পুরোহিতের বাড়ি জেলারই ভাতার থানার রামচন্দ্র এলাকায়। গুসকরা পুলিশ অভিযুক্ত বছর আটষট্টির ওই পুরোহিতকে গ্রেফতার করে ৷ শনিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয় ৷ যদিও পুরোহিতের দাবি, তাঁকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে গুসকরা শহরের একটি বাড়িতে ওই পুরোহিত পুজো করতে যান। পরের দিন শুক্রবার সকালের দিকে উনি ফের যান পুজো শেষ করে দধিকর্মা দেওয়ার জন্য। সেদিন পুজো শুরু করার আগে তিনি ধুতি বদলানোর নাম করে বাড়ির উপরতলায় গৃ্হস্থের নাবালিকা (14) মেয়ের ঘরে ঢুকে পড়েন ৷ সেই ঘরে নাবালিকা মেয়ের একা থাকার সুযোগ নিয়ে তার হাতে কেক ও 20 টাকার নোট ধরিয়ে দেয়। এরপর তাকে জোর করে কোলে বসিয়ে অশালীন আচরণ করতে শুরু করেন।
এদিকে ওই নাবালিকার 6 বছরের ভাই খেলতে খেলতে সেই ঘরে ঢুকে পড়লে পুরোহিত নাবালিকাকে ছেড়ে দেন। এর মধ্যে নাবালিকার ভাই ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। তখন পুরোহিত ফের তাকে জাপটে ধরার চেষ্টা করলে নাবালিকা হাত ছিটকে নীচে নেমে গিয়ে তার মাকে সমস্ত ঘটনার কথা জানায়। পাড়া-প্রতিবেশীদের এঘটনার কথা জানানো হয়। পুলিশে খবর দেওয়া হলে পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পুরোহিতকে গ্রেফতার হয় ৷ আজ ওই পুরোহিতকে বর্ধমান জেলা আদালতে তোলা হয়।
- নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, উনি বয়স্ক মানুষ। আমাদের বাড়িতে প্রায় 7-8 বছর ধরে পুজো করে। বৃহস্পতিবার কালীপুজে করে তিনি বাড়ি থেকে চলে যায়। শুক্রবার সকালে আসেন দধিকর্মা করার জন্য। সকাল সাড়ে ন'টা নাগাদ আসার কথা ছিল কিন্তু তারও আগে চলে আসে। আমি তখন মন্দিরে পুজোর জোগাড় করছিলাম। তখন সে উপরতলায় ধুতি বদলানোর নাম করে আমার মেয়ের ঘরে চলে যায়। মেয়ে তখন একা ছিল। আমার মেয়েকে কোলে বসায়।
- মেয়ের জন্য কেক কিনে নিয়ে এসেছিল। এমনকী 20 টাকা দেয়ও মেয়ের হাতে। ওর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে ৷ সেই সময় আমার ছেলে ঘরে ঢুকে পড়ে। ছেলে ঢুকতে দেখে মেয়েকে ছেড়ে দেয়। এরপর ছেলে ঘর থেকে বের হতেই সে আবার মেয়েকে ধরতে যায়। সেই সময় মেয়ে ছিটকে পালিয়ে যায়। নীচে নেমে এসে সমস্ত ঘটনার কথা জানায়। এর আগে তাকে এই ধরনের ব্যবহার করতে দেখিনি।
- নাবালিকার বাবার অভিযোগ, পুরোহিতের বয়স মোটামুটি 68 বছর। অনেক বছর ধরেই সে পুজো করছে এই বাড়িতে। এদের কঠোর সাজা দেওয়া উচিত।'
- যদিও পুরোহিতের দাবি, তাঁকে মিথ্যে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, "ওই নাবালিকাকে আমি কেক খাওয়ানোর কথা আমি আগেই বলেছিলাম। তাই আমি কেক নিয়ে যাই। তবে কোনও টাকা-পয়সা দিইনি। আর তার গায়ে হাতও দিইনি। সে মিথ্যে অভিযোগ করেছে।"