হাড়োয়া, 31 অক্টোবর: আরজি কর-কাণ্ডে এবার জুনিয়র ডাক্তারদের বেলাগাম আক্রমণ করলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। উত্তর 24 পরগনার হাড়োয়োয় দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারির সুরে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, "হাসপাতালে দালালরাজ চালান ডাক্তাররাই। এত টাকা আসছে কোথা থেকে? ডাক্তারবাবুরা এত টাকা পাচ্ছেন কোথা থেকে?"
মন্ত্রী শোভনদেব আরও বলেন, "বলছে আন্দোলন হচ্ছে! আন্দোলনের নামে আপনারা কী করছেন? বেচারা সিপিএম সব দখল করে নিয়েছে ৷ কীসের আন্দোলন? হাসপাতালে গেলে চারদিকে দালালরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে আপনি একটা সিটও পাবেন না? এক একজন ডাক্তারদের বড় বড় দালাল ৷ হাসপাতালে গিয়ে দালালদের হাতে 50 হাজার টাকা গুঁজে দিতে পারলেই আপনি আপনার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারবেন। সেই টাকা ডাক্তার এবং দালালরা হাফ হাফ করে ভাগ করে নিতে পারলেই বাঁচে। এই তো চরিত্র ডাক্তারদের।"
বুধবার হাড়োয়োয় দলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শাসকদলের এই প্রবীণ নেতা। সেখানেই একঝাঁক নেতার সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের নিশানা করেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সেই বক্তব্যের ভিডিয়ো ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত। শুধু জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তোলাই নয়, ডাক্তারদের আন্দোলনকে সিপিএম এবং নকশালদের আন্দোলন বলেও কটাক্ষ করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
তাঁর দাবি, এই আন্দোলন সংগঠিত করতে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সিপিএম এই আন্দোলনে জায়গা পেলেও ডাক্তারদের আন্দোলনে, সেভাবে কোনও জায়গা পায়নি বিজেপি। আন্দোলনটা দখল করে নিয়েছিল নকশাল আর সিপিএমরা।
আন্দোলনের মাঝেই দুর্ঘটনায় আহত এক যুবকের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, "একজন মা, দুর্ঘটনায় আহত তাঁর ছেলের প্রাণ বাঁচাতে পা পর্যন্ত ধরেছিলেন ডাক্তারবাবুর। তারপরও মায়ের চোখের সামনে ছেলেটা মারা গেল। ডাক্তারবাবু চিকিৎসা করলেন না।ডাক্তারবাবুরা বলছেন, বড় আন্দোলনে দু-একজন মারা যান। তাঁরা ডাক্তার হয় কী করে?"
শোভনদেব বলেন, "রাজ্য সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে ডাক্তার তৈরি করতে হয়। আজকে তাঁরা সরকারে কাজ না করে আন্দোলন করছে। সে কী আন্দোলন রে বাবা! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 26 দিন অনশন করেছিলেন। এখানে দামি দামি খাবার চলে আসছে। কত কোটি টাকা তুলেছে খাবারের জন্য। 11টা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে খাবারের জন্য। বলছে আন্দোলন হচ্ছে, আসলে আন্দোলনের নামে কী হচ্ছে তা সকলেই দেখতে পাচ্ছে!" এদিকে, ডাক্তারদের আন্দোলনে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও বিস্ফোরক দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।