কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর: ভাইরাল অডিয়ো-কাণ্ডে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট সিপিএম নেতা কলতান দাশগুপ্তর জামিন মঞ্জুর করেছে। এই খবর পাওয়ার পর শ্যামবাজারের অবস্থান মঞ্চ থেকে ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় আরজি করের বিচার চেয়ে আন্দোলনের দাবি শেষ দেখার হুঁশিয়ারি দিলেন। যতক্ষণ না সঠিক বিচার পাওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত রাস্তা না ছাড়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। আরজি কর ইস্যুতে শুধু শহর কলকাতা নয়, গ্রাম মফস্বলের মানুষও পথে নেমেছেন। সেই গ্রাম মফস্বলের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়ে আগামী 26 সেপ্টেম্বর বেলা 12টায় কলকাতার রাজপথ দখলের ডাক দিলেন বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
এদিন তিনি বলেন, "কলতানকে আর বন্দি রাখতে পারবে না। এ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন একই রকমভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মিথ্যা মামলা করতে পারবে না। শুক্রবার থেকে কলতান দাশগুপ্তের কলতান আরও বেশি তীব্রতর হবে। শুক্রবার সাড়ে 10টার সময় বিধাননগর আদালতে সাধারণ মানুষ গণজমায়েত করবেন আরজি কর কাণ্ডে এবং আন্দোলনকারীদের মিথ্যা কেসে ফাঁসানোর বিরুদ্ধে বিচারের দাবিতে।"
মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, "লড়াই থামবে না। ওরা একজন কলতানকে বন্দি করে রাখলেও হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদের কলতান রুখতে পারবে না। গোটা রাজ্যের মানুষ যেভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত করেছেন, তাদের আমরা সেলাম জানায়। এ লড়াই মানুষের। এ লড়ায় রাস্তার ৷ এই লড়াইয়ের শেষ রাস্তাতেই হবে। এ লড়াই করতে যতদূর যেতে হয়, গোটা রাজ্যের মানুষকে সাথে নিয়ে বামপন্থী ছাত্র জীবন মহিলারা ততদূর যাবে। এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না।"
তিনি আরও বলেন, "কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই দেশবিরোধী আইনে মামলা করে গ্রেফতার করে। সেই পথেই হাঁটছে রাজ্যের শাসক দল। এদের বিরুদ্ধে কথা বললেই ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতার ৷ এদের বিরুদ্ধে কথা বললেই বিভিন্ন আইনে জোর করে জেলে ভরে দেওয়া হয়। তাহলে কি এই লড়াই এই আন্দোলনকে ভাঙার জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের থেকে শিক্ষা নিয়ে গ্রেফতার ষড়যন্ত্র করছে ? তারা যদি মনে করে এটাই তাদের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য, তবে তাদের উদ্দেশে বলছি, রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপির 'টিউশন' এখানে কাজ করবে না। বিজেপির থেকে শিক্ষা নিয়ে আরএসএসের সমর্থন পেয়ে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন যেভাবে সাপের পাঁচ পা দেখে, হাত-পা নাড়তে শুরু করেছেন, তাদের বলে রাখি, সাধারণ মানুষ যেভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ শুরু করেছে, তাতে আপনাদের এই লড়াই আন্দোলনকে ভাঙা সম্ভব হবে না।"
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সতর্ক করে মীনাক্ষী বলেন, "সিবিআই আজকে আমাদের ডেকেছিল ৷ সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলাম ৷ আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের জন্য যা-যা সাহায্য করার প্রয়োজন, তা করব। তথ্যও দিয়েছি। বলে এসেছি, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সিবিআইকেও মনে রাখতে হবে, যেমন লালবাজারের দিকে সাধারণ মানুষের নজর রয়েছে, ঠিক তেমনি সিবিআই-এর থেকে সাধারণ মানুষ নজর সরছে না।"
বাম নেত্রীর দাবি, এই আন্দোলন শহরের বস্তি থেকে শুরু করে গ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের পৌঁছে গিয়েছে মানুষ রাস্তায় নামছে। তাই নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে আগামী 26 তারিখ কলকাতা সাধারণ মানুষের দখলে থাকবে। গণজমায়েত হবে কলকাতার বুকে ৷ বামপন্থী ছাত্র যুব মহিলাদের উদ্যোগে। ওইদিন দুপুর 12টায় কলকাতার রাজপথ দখল নেবে বিচারের দাবিতে ৷