কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: হিন্দি বনাম বাংলা ভাষা নিয়ে সাম্প্রতিক কালে বারবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কিছুদিন আগেই কলকাতা মেট্রোর টিকিট কাউন্টারে বাংলা ভাষায় কথা বলা যাত্রীকে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে বাধ্য করেন মেট্রো কর্মী। সেই ভাইরাল ভিডিয়ো ও অভিযোগ ঘিরে তুমুল আলোড়ন পড়ে যায় গণমাধ্যমে। রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কও হয়।
এবার সেই আঁচ এসে পড়ল কলকাতা কর্পোরেশনে। কর্পোরেশনের মাসিক অধিবেশনে এই সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব পেশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। পাশাপাশি এই বিষয় কটাক্ষের সুরে ফিরহাদ বলেন, "মেট্রোর যে কর্মী বাংলা বোঝেন না, তাঁকে চিড়িয়াখানায় রাখা উচিত।"
তিনি বলেন, "এই বাংলায় 86 শতাংশ মানুষের কথ্য ভাষা বাংলা। 83 শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। 16-17 শতাংশ মানুষ অন্য ভাষার। সম্প্রতি কলকাতায় সাইন বোর্ড বাংলা ভাষা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষায় কথা না বলে হিন্দিতে কথা বলার জন্য চাপ দিচ্ছেন মেট্রোর কর্মী। বাংলায় কথা বলা লোকজনকে বাংলাদেশে যেতে বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ভারতে বসবাসকারী লোকজনকে বাংলা নয়, হিন্দিতে কথা বলতে হবে।" তিনি এদিন প্রস্তাব দেন, "শুধু মেট্রো নয়, কলকাতায় অবস্থিত সমস্ত সরকারি, বেসরকারি অফিসের কাজকর্ম বাংলা ভাষায় কথা বলেন এমন লোকেদের দিয়েই করানো হোক।"
এই প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি শুরুতেই জানান, মেট্রোর ঘটনা সম্পর্কে অবগত। প্রতিদিন মেট্রোয় লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। এই পরিস্থিতি এমন ব্যক্তিকে মেট্রোর টিকিট কাউন্টারে বসানো উচিৎ যাতে হিন্দি বাংলা নয় ইংরেজি, উর্দু সব ভাষাতেই কথা বলতে ও বুঝতে পারেন।
তাঁর কথায়, "হিন্দির মতো বাংলাও একটি ভারতীয় ভাষা।" এরপর তিনি জানান, মেট্রো রেলের জিএম'কে তিনি বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখবেন দ্রুত। যেখানে তিনি অনুরোধ করবেন যে, টিকিট কাউন্টারে সমস্ত ভাষা বোঝেন এমন লোক নিয়োগ করতে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলেও জানান মেয়র।