ETV Bharat / state

ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া, পরিণতি পেল বিশেষভাবে সক্ষম রিংকি-রাজিতের প্রেম কহানি - Marriage of Specially Abled

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 29, 2024, 10:44 PM IST

Power of Social Media: ফেসবুকে আলাপ ৷ তারপর প্রেম ৷ পরিণতি বিয়ে ৷ এমনটা তো কতই হয় ৷ কিন্তু সেই বিয়ের পাত্র ও পাত্রী দু'জনেই যখন বিশেষভাবে সক্ষম, তখন প্রেমটা অন্যরকম যেতে হয় বইকি ! তেমনটাই ঘটেছে মালদা শহরে ৷

Marriage of Specially Abled
বিশেষভাবে সক্ষম পাত্র ও পাত্রীর বিয়ে (নিজস্ব ছবি)

মালদা, 29 জুন: "ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনের মন্দিরে ৷" ফেসবুকে আলাপ থেকে এই গল্পের সূচনা ৷ নায়ক ও নায়িকা দু'জনেই বিশেষভাবে সক্ষম ৷ নায়ক উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রাজিত সিং ৷ আর নায়িকা মালদার রিংকি দাস ৷

বিশেষভাবে সক্ষম দুই প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম পরিণতি পেল (ইটিভি ভারত)

তবে এই গল্পের শেষে বিচ্ছেদ নেই ৷ দুই পরিবারের সম্মতিতে শেষে প্রেম পরিণতি পেল তাঁদের ৷ বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হলেন দু'জনে ৷ দুই পরিবারে বাঁধ ভাঙা খুশির উচ্ছ্বাস ৷ তাতে সামিল ম্যারেজ রেজিস্টার থেকে পাড়া প্রতিবেশী ৷ এই গল্পের চার হাত এক হওয়ার দৃশ্য লেখা হল মালদা শহরে ৷

এটা সিনেমা নয়, বাস্তব ৷ তবে সিনেমার থেকে এই গল্প কম কিছু না ৷ চলুন গল্পের পাত্র-পাত্রীর সঙ্গে আলাপ করা যাক ৷

Marriage of Specially Abled
বিয়েতে খুশি পরিবার পরিজন (নিজস্ব ছবি)

মালদা শহরের মকদুমপুর সংলগ্ন এলিট কর্ণারের বাসিন্দা নারু দাস ৷ ছোটখাটো ব্যবসায়ী ৷ স্ত্রী কল্পনা দাস নিছকই গৃহবধূ ৷ তাঁদের মেয়ে রিংকি ৷ ছোট থেকেই মূক ও বধির ৷ শৈশবে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন তাঁরা ৷ কিন্তু চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের মেয়ে কোনওদিন ঠিকমতো শুনতে কিংবা বলতে পারবে না ৷ মেয়ের বয়স হয়ে গেলেও বিয়ে দিতে পারেননি তাঁরা ৷ কেউ যে কোনওদিন তাঁদের মেয়েকে বিয়ে করবে, সেটাও ভাবেননি কখনও ৷ এভাবেই পেরিয়ে গিয়েছে 32টি বছর ৷

একই অবস্থা উত্তরপ্রদেশের বেরিলির বাসিন্দা কিষান পাল ও কমলাদেবীর একমাত্র ছেলে রাজিতের ৷ তিনিও জন্মের পর থেকে কথা বলতে কিংবা শুনতে পান না ৷ 35 বছর বয়সি রাজিত সিং একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করেন ৷

Marriage of Specially Abled
ফেসবুকে প্রেম থেকে বিয়েতে পরিণতি বিশেষভাবে সক্ষম পাত্র-পাত্রীর (নিজস্ব ছবি)

এবার গল্পের মূল অংশে ফেরা যাক

কোনও একদিন ফেসবুকে পরিচয় হয় রিংকি-রাজিতের ৷ সেখান থেকে ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া ৷ হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে আলাপ ৷ একসময় তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ৷ সেই প্রেমের টানে কিছুদিন আগে চাকরিতে ছুটি নিয়ে মালদা চলে আসেন রাজিত ৷ ঠিকানা মিলিয়ে চলে যান রিংকির বাড়ি ৷

প্রথমবার সামনে দাঁড়িয়ে দেখেন প্রেয়সীকে ৷ নারু দাসের পরিবারকে রাজিত জানান, তিনি রিংকিকে বিয়ে করতে চান ৷ কিন্তু অজানা অচেনা একজনের হাতে মেয়েকে কীভাবে তুলে দেবেন বাবা-মা? তাই তাঁরা যোগাযোগ করেন রাজিতের বাবা-মায়ের সঙ্গে ৷ বেরিলিতে তাঁদের বাড়িতেও যান ৷ সব দেখেশুনে সন্তুষ্ট হয়ে শুক্রবার তাঁরা মেয়ের হাত তুলে দিয়েছেন রাজিতের হাতে ৷

রিংকির দাদা শুভাশিসের কথায়, "বোন কথা বলতে পারে না, শুনতেও পায় না ৷ বাড়িতে বসে ফেসবুক করত ৷ সেখান থেকেই ওর সঙ্গে বেরিলির এই যুবকের পরিচয় হয় ৷ ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৷ ছেলেটি চাকরি ছেড়ে এখানে চলে আসে ৷ মালদায় এসে সে আমাদের বাড়িতে আসে ৷ আমার বোনকে বেরিলি নিয়ে যাবে বলে জানায় ৷ আমাদের বাড়িতেই সে দু'দিন ছিল ৷ আমরা দেখলাম, খুব ভালো ছেলে ৷ তারপর আমরা বেরিলি যাই ৷ ওদের বাড়িঘর সব দেখি ৷ তারপর ওদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই ৷ ছেলেটি চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে এসেছে ৷ ফিরে গেলেই চাকরিতে যোগদান করতে পারবে ৷ সবার সহমতেই এই বিয়ে হয়েছে ৷"

রিংকি-রাজিতের বিয়ে দিয়ে উচ্ছ্বসিত ম্যারেজ রেজিস্টার সৌরজিৎ রায় বলেন, "আমি 400 নম্বর বিয়ে দিলাম ৷ পরেও হয়তো 10 হাজার বিয়ে দেব ৷ কিন্তু এমন বিয়ের সাক্ষী আর থাকতে পারব কি না জানি না ৷ মেয়ের বাড়ি আমার বাড়ির পিছনেই ৷ আমি এই বিয়েতে কোনও পারিশ্রমিক নিইনি ৷"

মালদা, 29 জুন: "ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনের মন্দিরে ৷" ফেসবুকে আলাপ থেকে এই গল্পের সূচনা ৷ নায়ক ও নায়িকা দু'জনেই বিশেষভাবে সক্ষম ৷ নায়ক উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রাজিত সিং ৷ আর নায়িকা মালদার রিংকি দাস ৷

বিশেষভাবে সক্ষম দুই প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম পরিণতি পেল (ইটিভি ভারত)

তবে এই গল্পের শেষে বিচ্ছেদ নেই ৷ দুই পরিবারের সম্মতিতে শেষে প্রেম পরিণতি পেল তাঁদের ৷ বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হলেন দু'জনে ৷ দুই পরিবারে বাঁধ ভাঙা খুশির উচ্ছ্বাস ৷ তাতে সামিল ম্যারেজ রেজিস্টার থেকে পাড়া প্রতিবেশী ৷ এই গল্পের চার হাত এক হওয়ার দৃশ্য লেখা হল মালদা শহরে ৷

এটা সিনেমা নয়, বাস্তব ৷ তবে সিনেমার থেকে এই গল্প কম কিছু না ৷ চলুন গল্পের পাত্র-পাত্রীর সঙ্গে আলাপ করা যাক ৷

Marriage of Specially Abled
বিয়েতে খুশি পরিবার পরিজন (নিজস্ব ছবি)

মালদা শহরের মকদুমপুর সংলগ্ন এলিট কর্ণারের বাসিন্দা নারু দাস ৷ ছোটখাটো ব্যবসায়ী ৷ স্ত্রী কল্পনা দাস নিছকই গৃহবধূ ৷ তাঁদের মেয়ে রিংকি ৷ ছোট থেকেই মূক ও বধির ৷ শৈশবে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন তাঁরা ৷ কিন্তু চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের মেয়ে কোনওদিন ঠিকমতো শুনতে কিংবা বলতে পারবে না ৷ মেয়ের বয়স হয়ে গেলেও বিয়ে দিতে পারেননি তাঁরা ৷ কেউ যে কোনওদিন তাঁদের মেয়েকে বিয়ে করবে, সেটাও ভাবেননি কখনও ৷ এভাবেই পেরিয়ে গিয়েছে 32টি বছর ৷

একই অবস্থা উত্তরপ্রদেশের বেরিলির বাসিন্দা কিষান পাল ও কমলাদেবীর একমাত্র ছেলে রাজিতের ৷ তিনিও জন্মের পর থেকে কথা বলতে কিংবা শুনতে পান না ৷ 35 বছর বয়সি রাজিত সিং একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করেন ৷

Marriage of Specially Abled
ফেসবুকে প্রেম থেকে বিয়েতে পরিণতি বিশেষভাবে সক্ষম পাত্র-পাত্রীর (নিজস্ব ছবি)

এবার গল্পের মূল অংশে ফেরা যাক

কোনও একদিন ফেসবুকে পরিচয় হয় রিংকি-রাজিতের ৷ সেখান থেকে ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া ৷ হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে আলাপ ৷ একসময় তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ৷ সেই প্রেমের টানে কিছুদিন আগে চাকরিতে ছুটি নিয়ে মালদা চলে আসেন রাজিত ৷ ঠিকানা মিলিয়ে চলে যান রিংকির বাড়ি ৷

প্রথমবার সামনে দাঁড়িয়ে দেখেন প্রেয়সীকে ৷ নারু দাসের পরিবারকে রাজিত জানান, তিনি রিংকিকে বিয়ে করতে চান ৷ কিন্তু অজানা অচেনা একজনের হাতে মেয়েকে কীভাবে তুলে দেবেন বাবা-মা? তাই তাঁরা যোগাযোগ করেন রাজিতের বাবা-মায়ের সঙ্গে ৷ বেরিলিতে তাঁদের বাড়িতেও যান ৷ সব দেখেশুনে সন্তুষ্ট হয়ে শুক্রবার তাঁরা মেয়ের হাত তুলে দিয়েছেন রাজিতের হাতে ৷

রিংকির দাদা শুভাশিসের কথায়, "বোন কথা বলতে পারে না, শুনতেও পায় না ৷ বাড়িতে বসে ফেসবুক করত ৷ সেখান থেকেই ওর সঙ্গে বেরিলির এই যুবকের পরিচয় হয় ৷ ওদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ৷ ছেলেটি চাকরি ছেড়ে এখানে চলে আসে ৷ মালদায় এসে সে আমাদের বাড়িতে আসে ৷ আমার বোনকে বেরিলি নিয়ে যাবে বলে জানায় ৷ আমাদের বাড়িতেই সে দু'দিন ছিল ৷ আমরা দেখলাম, খুব ভালো ছেলে ৷ তারপর আমরা বেরিলি যাই ৷ ওদের বাড়িঘর সব দেখি ৷ তারপর ওদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই ৷ ছেলেটি চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে এসেছে ৷ ফিরে গেলেই চাকরিতে যোগদান করতে পারবে ৷ সবার সহমতেই এই বিয়ে হয়েছে ৷"

রিংকি-রাজিতের বিয়ে দিয়ে উচ্ছ্বসিত ম্যারেজ রেজিস্টার সৌরজিৎ রায় বলেন, "আমি 400 নম্বর বিয়ে দিলাম ৷ পরেও হয়তো 10 হাজার বিয়ে দেব ৷ কিন্তু এমন বিয়ের সাক্ষী আর থাকতে পারব কি না জানি না ৷ মেয়ের বাড়ি আমার বাড়ির পিছনেই ৷ আমি এই বিয়েতে কোনও পারিশ্রমিক নিইনি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.