বসিরহাট, 8 জুলাই: আবারও ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগ বসিরহাটে ৷ মানসিক ভারসাম্যহীনকে বেঁধে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মাটিয়া থানার মোমিনপুর উত্তরপাড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আঘাত গুরুতর নয় ৷
পরবর্তী সময়ে হাসপাতাল থেকে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, আহতের বাড়ি শাসন থানা এলাকায় ৷ তিনি নাকি মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পরিবার এলেই ওই ব্যক্তিকে তুলে দেওয়া হবে তাঁদের হাতে। জানা গিয়েছে, সোমবার ওই ব্যক্তি রাজেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের মোমিনপুর উত্তরপাড়ায় ইতস্তত ঘোরাফেরা করছিলেন। তাঁর কথাবার্তাও অসংলগ্ন ছিল। তাতেই ছেলেধরা সন্দেহ হয় গ্রামের লোকজনের। ব্যক্তির কোনও কথা না-বুঝেই শুরু হয়ে যায় মারধর। গেঞ্জি ধরে তাঁকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে রাস্তার ধারে একটি খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয় বলে অভিযোগ ৷
সেখানেই উত্তেজিত জনতা ওই ব্যক্তিকে মারধর করে বলে অভিযোগ ৷ ওই ব্যক্তি গ্রামে ঢুকে বাচ্চা চুরির চেষ্টা করেছিল বলে দাবি স্থানীয় এক মহিলার। তিনি বলেন, "রাস্তার ধারে এদিন বেশ কয়েকজন বাচ্চা খেলা করছিল। তখনই ওই ব্যক্তি লজেন্সের লোভ দেখিয়ে দু'জন বাচ্চাকে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। দেখে ফেলায় তা আর সম্ভব হয়নি। এভাবে গ্রামের ভিতরে ঢুকে কেউ যদি বাচ্চা চুরি করতে আসে তাহলে ভয় তো লাগবেই। পুলিশ বলছে, এসব কিছু করেনি। যদি করত তখন তো পুলিশই এর দায় নিতে অস্বীকার করত। ভুগতে হত গ্রামের লোকজনকেই।"
এদিনের ঘটনার ভিডিয়ো ঘুরতে থাকে নেটপাড়ায় ৷ ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির চারপাশে ভিড় করে রয়েছে অসংখ্য লোকজন। প্রথমে তাঁর সঙ্গে কথা বলে পরিচয় জানার চেষ্টা চলে। কথাবার্তার মাঝেই আচমকা কয়েকজন গেঞ্জি ধরে মারতে মারতে ব্যক্তিকে রাস্তার ধারে নিয়ে যায় ৷ সেখানেও মারধর করে ৷ যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত।
প্রসঙ্গত, ছেলেধরা এবং চুরির গুজবে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। গণপিটুনির জেরে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনা রুখতে পুলিশ প্রশাসনের তরফে প্রচার এবং সতর্ক, দুই-ই করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি, তা এদিনের ঘটনাতেই স্পষ্ট ৷