কলকাতা, 16 জানুয়ারি: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে 12 জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করল রাজ্য ৷ স্যালাইন-কাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু 5 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যদি তাঁদের পরিবারের কেউ চাকরি করতে চান, তবে একজনকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টিও সরকার ভেবে দেখবে বলে জানান মমতা ৷ তাঁর উপস্থিতিতেই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিভ প্রসিডিওর মানতে হয়, তা মানা হয়নি ৷
আজ নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মেদিনীপুরে গাফিলতি রয়েছে । তিনি এও বলেন যে, অপারেশনের সময় সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না । অপারেশন করেন জুনিয়ার ট্রেনিরা । এমনকি অ্যানাস্থেশিয়াও দিয়েছিলেন জুনিয়র ট্রেনিরা । নবান্নে এই সংক্রান্ত যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা থেকেই এই তথ্য জানা গিয়েছে বলে জানান মুখ্যসচিব ।
এদিন মুখ্যসচিব বক্তব্য রাখার পর মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, "যাঁদের হাতে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, যাঁদের হাত দিয়ে সন্তানের জন্ম হয়, তাঁরা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে এই মাকে এবং সন্তানকে বাঁচানো যেত । চিকিৎসকরা সতর্ক হলে এই ঘটনার এড়ানো যেত ।"
এদিন এই ঘটনায় 12 জন সিনিয়র চিকিৎসক ও পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । তাঁর কথায়, "নেগ্লিজেন্স এক্ষেত্রে ক্রাইম । মানুষের জীবনের থেকে বড় কিছু হয় না । দায়িত্ব পালন করেননি চিকিৎসকেরা । আর অবহেলার জন্যই কড়া ব্যবস্থা ।"
এদিন যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন 6 জন চিকিৎসক এবং 6 জন পিজিটি । ছয়জন চিকিৎসকের মধ্যে মেদিনীপুরের আরএমও এবং এমএসভিপির নামও রয়েছে । এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপারেশন থিয়েটারের গেট পর্যন্ত সিসিটিভি বসানোর নির্দেশও দিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, সিআইডি তার মতো করে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করবে ।
মুখ্যমন্ত্রী যে 12 জন চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেছেন, তার মধ্যে রয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের আরএমও ডা. সোমেন দাস, ডা. দিলীপ কুমার পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডা. হিমাদ্রি নায়েক, এইচওডি ডা. মহম্মদ আলাউদ্দিন, মেদিনীপুর মেডিক্যালের এমএসভিপি ডা. জয়ন্ত কুমার রাও, সিনিয়র রেসিডেন্ট ডা. পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়, পিজিটি ডা. মৌমিতা মণ্ডল, পিজিটি ডা. ভাগ্যশ্রী কুণ্ডু, পিজিটি ডা. সুকান্ত মণ্ডল, পিজিটি ডা. পূজা সাহা, পিজিটি ডা. মণীশ কুমার ও আর এক পিজিটি ডা. জাগৃতী ঘোষ ৷
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, "2010-11-তে 3 হাজার 584 কোটি টাকার বাজেট ছিল । এখন তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । এখানে যা হয়েছে কোথাও হয়নি । মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা 11 থেকে বেড়ে হয়েছে 37 । সরকারি হাসপাতালে 40 হাজার বেড বেড়েছে ।"