কলকাতা, 23 জানুয়ারি: নেতাজি রহস্য উদঘাটন থেকে শুরু করে জাতীয় ছুটি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একযোগে আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় সরকারকে । একই সঙ্গে তাঁর সমালোচনা নেতাজির তৈরি প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া নিয়েও । মঙ্গলবার নেতাজিকে সামনে রেখে নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । তাঁর কটাক্ষ, দেশের নেতা সেই হয়, যে সকলকে নিয়ে চলে ।
নেতাজির 128তম জন্মজয়ন্তীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা যদি সার্থকভাবে কাউকে অনুসরণ করে থাকি তিনি হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু । সুভাষচন্দ্র বসু সমাজ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন । তিনি তৈরি করেছিলেন প্ল্যানিং কমিশন । দেশের কি দুর্ভাগ্য-যে মানুষটা দেশকে দিশা দেখাতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন আর তাঁর তৈরি প্ল্যানিং কমিশনকেও তুলে দেওয়া হল ।’’
এ দিন নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য প্রকাশ্যে না আনতে পারার জন্য কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সরকার নেতাজি সংক্রান্ত 64টি ফাইল প্রকাশ করেছে । ক্ষমতায় আসার আগে আপনারা বলেছিলেন, নেতাজি রহস্যের উন্মোচন করবেন । তারপর সব হয়ে যায় । নেতাজিকে ভুলে যায় । নেতাজির নামে একটি পোর্ট এবং ডকের নামও ছিল । সেটিকে পর্যন্ত বদলে দেওয়া হয়েছে ।’’
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া নিয়ে । তিনি বলেন, ‘‘নেতাজির তৈরি প্ল্যানিং কমিশনকে তুলে দিয়েছে এই কেন্দ্রীয় সরকার । প্ল্যানিং কমিশন যখন ছিল প্রত্যেক বছর বিভিন্ন রাজ্যের আধিকারিক ও মুখ্যসচিবদের নিয়ে বৈঠক হত । বিবেচনা করা হত, কোথায় কোথায় কত টাকা দিতে হবে ? কী আমাদের চিন্তাধারা । আজ প্ল্যানিং কমিশন নেই, দেশের জন্য কোনও প্ল্যান নেই । প্ল্যানিং একটাই, প্ল্যানিংটা কিলিংয়ে চলে গিয়েছে । প্ল্যানিং এখন ব্রুটালিটির (হিংসা) মধ্যে চলে গিয়েছে । প্ল্যানিং এখন হেট্রেড পলিটিক্স বা ঘৃণার রাজনীতি আর ডিভাইড অ্যান্ড রুল হয়ে দাঁড়িয়েছে ।’’
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগ সম্পর্কে বলেন, ‘‘এখন তৈরি হয়েছে নীতি আয়োগ- যার না আছে নীতি, না আছে আয়োগ । একেবারে মোমের পুতুল মোমের মতো ঘাড় নাড়ে । বছরে কখনও কখনও মিটিং করে মন কা বাত শোনায় । মানুষের কথা শোনে না । কোনও ক্ষমতা নেই । ক্ষমতাহীন একটা মোমের পুতুলের মতো বসে আছে ।’’
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর গলায় আফসোসের সুরও শোনা গিয়েছে নেতাজি-জয়ন্তীতে জাতীয় ছুটি না থাকায় । তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা দুঃখ রয়ে গিয়েছে, প্রায় 20 বছর ধরে লড়াই করেও নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করাতে পারলাম না । আমি দুঃখিত আমি লজ্জিত । এদেশে পলিটিকাল প্রচারে ছুটি হয়ে যায় । কিন্তু যাঁরা দেশের জন্য জীবন দেন, তাঁরা বসে বসে কাঁদেন ৷’’
আরও পড়ুন: