কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: কেন্দ্র 69টা টিম পাঠিয়েছে, যা চেয়েছে তাই দেওয়া হয়েছে । তারপরেও টাকা দেয়নি কেন্দ্র । মঙ্গলবার ফের আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এদিন বাংলার বাড়ি প্রকল্পের 12 লক্ষ উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির 60 হাজার টাকা দেওয়ার অনুষ্ঠান থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন তিনি ৷
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কথা দিলে কথা রাখেন তিনি । কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ার ফলে তিনি কথা দিয়েছিলেন 12 লক্ষ মানুষকে আবাসের টাকা দেবেন । সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হল ৷
এদিন নবান্ন সভাঘর থেকে 21টি জেলার 42 জন উপভোক্তার হাতে আবাস প্রকল্পের অনুমোদন পত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানান, 40 লক্ষ উপভোক্তার নাম এই বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় ছিল । আপাতত 12 লক্ষ উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হলেও বাকি থাকা 16 লক্ষ উপভোক্তাকেও আগামিদিনে বাড়ি করার জন্য ধাপে ধাপে অর্থ দেবে রাজ্য সরকার ।
তিনি আরও জানান, আগামী মে-জুন মাসে প্রথম দফায় আট লক্ষ উপভোক্তাকে এবং পরবর্তী ধাপে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে বাকি 8 লক্ষ উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে ৷ ফলে 2026 এর জানুয়ারির মধ্যেই আবাসের 28 লক্ষ উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হবে ৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেন, ‘‘আবাসে গোটা দেশে এক নম্বরে থাকা সত্ত্বেও গত তিন বছর ধরে কেন্দ্র আমাদের টাকা দেয়নি । এর ফলে বাংলার গরিব মানুষেরা বঞ্চিত হয়েছেন । আর সেই কারণেই এই বাড়ি আমরা তৈরি করে দেব বলেছিলাম । সেই কথা রাখার কাজ শুরু হল । কথা দিলে কীভাবে সেই কথা রাখতে হয়, আমরা জানি ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিসংখ্যান উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই আবাস প্রকল্পে এই রাজ্যে 45 লক্ষ 69 হাজার মানুষ পাকা বাড়ি পেয়েছেন । এখনও বাকি আছে 40 লক্ষ পাকা বাড়ি । এক্ষেত্রে এখন 12 লক্ষকে পাকা বাড়ির জন্য 60 হাজার টাকা করে দেওয়া হল । পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আরও মানুষকে এই টাকা দেওয়া হবে ৷
তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের দেওয়া এই অর্থে কেন্দ্রের কোনও ভাগ নেই । তাঁর কথায়, ‘‘আজকের দিনটি ঐতিহাসিক । সরকার তার নিজের ক্ষমতায় সম্পূর্ণ নিজের টাকায় গরিব মানুষকে বাড়ি করে দিচ্ছে ।’’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, 100 দিনের প্রকল্পেও বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করছে কেন্দ্র ৷
এদিকে সাম্প্রতিক অতীতে আবাসের তালিকা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি । এদিন মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, তালিকা তৈরিতে কোনও অসচ্ছ্বতা ছিল না ৷ তিনি বলেন, ‘‘27 হাজারের বেশি টিম 35 লক্ষ মানুষের বাড়িতে গিয়েছে । যাতে আমরা সঠিকভাবে যোগ্য উপভোক্তাদের বেছে নিতে পারি । এই 35 লক্ষ উপভোক্তার মধ্যে থেকে 28 লক্ষ উপভোক্তাকে তারা যোগ্য হিসেবে আইডেন্টিফাই করেছে । এই দফায় 12 লক্ষ উপভোক্তাকে দেওয়া হলেও বাকি 16 লক্ষ উপভোক্তা 26 সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পাবেন ।’’