কলকাতা, 28 অগস্ট: চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পাশাপাশি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে তিনি কী করতে পারতেন, অথচ মানবিক কারণে করেননি, তাও মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী ।
বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে নানা প্রসঙ্গে বক্তব্যের মাঝে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে চিকিৎসকদের আন্দোলন ও কর্মবিরতির প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন ক'রে জানান, "আজ জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল । আমি চাই তাঁরা ভালো করে করুন । আমার সমর্থন তাঁদের প্রতি ছিল, আছে, থাকবে । তাঁরা অনেক পরিষেবা দেন ।"
পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, "আপনারা তো মানবিক । আপনারা তো অঙ্গীকারবদ্ধ মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য । সুপ্রিম কোর্টও অনুরোধ করেছে সবাইকে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য । অনেক মানুষ পরিষেবা না-পেয়ে মারা গিয়েছেন । এরা গরিব লোক । যাঁরা বড়লোক, কোটিপতি তাঁরা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেন । কিন্তু যাঁরা গরিব লোক তাঁরা পারেন না । কোথায় যাবেন ? প্রসূতিা কী করে অপেক্ষা করবেন ? তার তো একটা সময় থাকে । হার্ট অ্যাটাক যদি কারও হয়, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হয় । এমন অনেক চিকিৎসা আছে যা জুনিয়র ডাক্তাররা করেন, সিনিয়ররা সঙ্গে থাকেন ।"
চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়ে, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে পারতেন তাও মনে করিয়ে দেন মমতা ৷ তিনি বলেন, "আপনারা আন্দোলন করেছেন, আমি কোনও ব্যবস্থা নিইনি । আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না । কারণ আপনাদের ক্ষোভ থাকতে পারে, অভিমান থাকতে পারে, দুঃখ থাকতে পারে । আপনারা বিচার চাইছেন । কিন্তু এবার ধীরে ধীরে কাজে যোগ দিন । সুপ্রিম কোর্ট কিন্তু ক্ষমতা দিয়েছে, রাজ্য সরকার অ্যাকশন নিতে পারে । আমি অ্যাকশন নিতে চাই না । কারণ আমি চাই চাই ওরা ভালো করে পড়াশুনো করুক । আমি কারও বিরুদ্ধে যদি এফআইআর করি, তার ভবিষ্যৎটা নষ্ট হয়ে যাবে । কোথাও চান্স পাবে না । পাসপোর্ট পাবে না । ভিসা পাবে না । আমি কারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে সে বিচার পাবে না । মনে রাখবেন তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে । আমাদের সরকারের মানবিক মুখ আছে । এই মানবিক মুখ নিয়ে আমরা আরও ডাক্তার তৈরি করতে চাই ।" মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে হুঁশিয়ারির সুর দেখতে পাচ্ছেন বিরোধীরা ৷ তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী ধমকি দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরাতে চাইছেন ?
সবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসকদের সুরক্ষা প্রসঙ্গে দাবি করেন, "আমরাই একমাত্র সরকার, যে চিকিৎসকদের সুবিধের জন্য রাত্রিসাথী প্রকল্প তৈরি করেছে । ইতিমধ্যেই 100 কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে । সিসিটিভি লাগাতে বলা হয়েছে । আলো লাগাতে বলা হয়েছে । কোথাও রেস্টরুমের অভাব থাকলে তা করে দিতে বলা হয়েছে । আগে হেলথ কী ছিল, এখন হেলথ ওয়েলথে রুপান্তরিত হয়েছে ।"