মালদা, 16 সেপ্টেম্বর: কুকথা অব্যাহত ৷ বাংলার রাজনীতিতে এই সংস্কৃতি এখন যেন শিকড় গেড়ে বসেছে ৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভাষায় আগল হারাচ্ছেন নেতা-নেত্রীরা ৷ এবার সেই তালিকায় নাম তুললেন মালদা জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সাগরিকা সরকার ৷ সংগঠনের বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে 'মহিষাসুর' বলে তোপ দাগলেন তিনি ৷ তাঁর মন্তব্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ৷
রবিবার সন্ধেয় হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকে 'মহিলাদের মুখোমুখি' নামে এক কর্মসূচির আয়োজন করে মহিলা তৃণমূল ৷ সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী সাগরিকা সরকার ৷ উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেন, দলের জেলা চেয়ারম্যান সমর মুখোপাধ্যায়, মর্জিনা খাতুন-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ সভায় মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল বেশ ভালো ৷
বক্তব্য রাখতে গিয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন সাগরিকা ৷ তিনি বলেন, "কিছুদিন আগে আরজি করে যে ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই নিন্দনীয় ৷ খুবই মর্মান্তিক ৷ আমিও একজন মেয়ে, মা ও স্ত্রী ৷ কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিপিআইএম এবং বিজেপি যেভাবে পথে নেমেছে, তা মেনে নেওয়া যায় না ৷ উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান দিয়ে এরা ভুল বুঝিয়ে মেয়েদের রাস্তায় নামিয়েছে ৷ এর জন্য সিপিআইএম আর বিজেপিকে আপনারা বয়কট করবেন ৷ এদের কোনও চক্রান্তে আপনারা কেউ পা দেবেন না ৷ আমাদের দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে যারা কুৎসা রটাবে, অপপ্রচার করবে, সেই কংগ্রেস, সিপিআইএম আর বিজেপিকে ঝাঁটা দিয়ে তুলোধনা করবেন ৷ মনে রাখবেন, আপনারাই দেবী দুর্গা ৷ অসুররা স্বর্গ দখল করার জন্য তাণ্ডব চালিয়েছিল ৷ সেভাবেই এখন পশ্চিম বাংলায় তাণ্ডব চালাচ্ছে বিজেপি ৷ ওরা পশ্চিমবঙ্গ দখল করার জন্য তাণ্ডব চালাচ্ছে ৷ এই অসুর আর কেউ নয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷"
সাগরিকার এহেন মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা ৷ বিজেপির জেলা সহ সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "গতকাল টালা থানার ওসি জেলে গিয়েছে ৷ এবার কালীঘাটের পিসি যাবে ৷ আমরা কিছু বলব না ৷ ওদের ক্ষমতা থাকলে মানুষের প্রতিবাদ, আন্দোলন থামিয়ে দেখাক ৷ মানুষই ওদের জবাব দিয়ে দেবে ৷"
হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস নেতা আবদুস সোবহানের বক্তব্য, "তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের কাছে রাজনৈতিক শিষ্টাচার, শালীনতা কিংবা মূল্যবোধ আশা করা যায় না ৷ ওরা সেসব বোঝেও না ৷ আমরা বেশি কথা বলব না ৷ মানুষ জেগে উঠেছে ৷ মানুষ এখন এদের জুতোপেটা করছে ৷ ভবিষ্যতে কী করবে, এরা নিজেরাই বুঝতে পারবে ৷"
অন্যদিকে, এলাকার সিপিআইএম নেতা সুব্রত দাস বলেন, "তৃণমূল মানেই দু’কান কাটা নির্লজ্জ একটা দল ৷ যে দলের কোনও নিয়ম শৃঙ্খলা, নীতি আদর্শ নেই ৷ কোনও দলের গোড়া খারাপ হলে ফল তো খারাপ হবেই ৷ আগামী দিনে মানুষ এদেরই ঝাঁটাপেটা করে তাড়াবে ৷ তারপরেই খেটে খাওয়া মেহেনতি মানুষ উৎসবে মাতবে ৷"