ভাটপাড়া, 18 নভেম্বর: ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা অশোক সাউ খুনের মূল অভিযুক্ত সুজল প্রসাদ ও তার সাগরেদ সানি দাসকে গ্রেফতার করল পুলিশ । ঘটনার ছ'দিনের মাথায় বর্ধমান স্টেশন থেকে এদের হাতেনাতে ধরে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বিশেষ তদন্তকারী দল । পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সুজল এবং সানি, এই দু'জনই তৃণমূল নেতা অশোক সাউকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল । ঘটনার পর দু'জনই বিহারে গা ঢাকা দিয়েছিল । বিপদ বুঝে সেখান থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল সুজল ও সানি ।
এর আগে তৃণমূল নেতা খুনে কাউসার আলি এবং সুজল পাসোয়ান নামে আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল ব্যারাকপুর কমিশনারেট । ফলে, খুনের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার । যদিও, এই খুনে পাঁচ জনের যুক্ত থাকার দাবি করেছে পুলিশ । এফআইআরে নাম থাকা বাকিদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে । এদিন ধৃত চারজনকেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের অফিসে নিয়ে আসা হয় ।সেখানে প্রত্যেককেই মুখোমুখি বসিয়ে এক প্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ করেন কমিশনারেটের শীর্ষকর্তারা ।
পরে, সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, "ধৃত সুজল প্রসাদ এবং সানি দাস দু'জনেরই বাড়ি ভাটপাড়ার কলাবাগান এলাকায় । সুজলের দাদা আকাশ প্রসাদের খুনের বদলা নিতেই এই খুন বলে জানতে পেরেছি আমরা । খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এরা ভাটপাড়ায় গোপন ডেরায় লুকিয়ে ছিল । এরপর বিহারে পালিয়ে যায় । সেখানে গা ঢাকা দেওয়ার পর বুঝতে পারে তাদের পিছনে পুলিশের টিম ঘোরাফেরা করছে । সে কারণে ধরা পড়ার ভয়ে বিহার থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার ছক কষছিল । সেই খবর পেয়ে তদন্তকারী দল সক্রিয় হয়ে ওঠে তাদের ধরতে । এরপর সুজল ও সানিকে বর্ধমান রেল স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয় ।"
নৈহাটিতে ভোট, ভাটপাড়ায় গুলিতে নিহত তৃণমূল নেতা; রিপোর্ট তলব কমিশনের
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন,"খুনে ব্যবহৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্রই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । বিহারে কোনও অপরাধের সঙ্গে এদের জড়িত থাকার তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । তৃণমূল নেতার শরীরে চারটে বুলেট মিলেছে । পরবর্তী সময়ে তদন্তে উঠে এসেছে, আরও কয়েক রাউন্ড গুলি করা হয়ে থাকতে পারে তাঁকে লক্ষ্য করে । সেসব নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে । কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসে অশোক সাউকে খুন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখছি আমরা ।"
এই খুনের ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের দুঁদে কর্তাদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল সিট গঠন করেন পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া । যার মাথায় রয়েছেন কমিশনারেটের ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাস । সিটের আধিকারিকরা ঘটনার তদন্ত নেমে জানতে পারেন, এর নেপথ্যে রয়েছে 'বদলা'-র আক্রোশ । এদিকে জেলে বসে এই খুনের পরিকল্পনার তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার । এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "এরকম কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত হাতে আসেনি ।"