ETV Bharat / state

দুর্গাপুজোর পর মাহেশের রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতির দাবি, আবেদন ট্রাস্টি বোর্ডের - RATHA YATRA 2024

RATHA YATRA 2024: দুর্গাপুজোর পর এবার মাহেশের রথ ৷ ইউনেসকো হেরিটেজের দাবি জানাল মাহেশ জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ ৷ চিঠি গিয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছেও ৷

RATHA YATRA 2024
মাহেশের রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতির দাবি (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 6, 2024, 3:16 PM IST

শ্রীরামপুর, 6 জুলাই: 'কপালকুণ্ডলা' উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র উল্লেখ করেছিলেন মাহেশের রথের ৷ এবার 628তম বর্ষে পা দিল এই রথযাত্রা ৷ পুরীর পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই রথ, এমনটাই দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের ৷ এবার সেই রথ এবং মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরকে ইউনেসকো হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানাল মন্দির কর্তৃপক্ষ ৷

মাহেশের রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতির দাবি (ইটিভি ভারত)

মাহেশের রথ দেখতে দেশ-বিদেশ থেকেও বহু মানুষের সমাগম হয়। জগন্নাথকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস, মিথ ও নানা গল্প ৷ সারা বছরই বিভিন্ন পূজার্চ্চনা হয় এই মন্দির ঘিরে। শুধু তাই নয়, মাহেশের জগন্নাথ মহাপ্রভুর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে আছে দেশব্যাপী। সেই সব ইতিহাস বা তথ্য পুঁথি সম্মিলিত করে এই রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে ৷ কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেসকো'র স্বীকৃতি পেয়েছে আগেই। এবার সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে মাহেশ জগন্নাথ মন্দির এবং রথকেও একই হেরিটেজ তকমা দেওয়ার দাবি জানানো হল ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে ৷ সরকারের কাছে এই আবেদন জানানো হয়েছে বলেও খবর।

মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক ও সেবায়েত পিয়াল অধিকারী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম রথযাত্রা হয় এই শ্রীরামপুর মাহেশে, এটা আমাদের গর্ব। সারা ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা এটি। মাহেশের ঐতিহাসিক রথযাত্রাকে কেন স্বীকৃতি দেওয়া হবে না ? কলকাতার দুর্গাপুজোকে যেমন ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি জগন্নাথের মাহেশের রথযাত্রাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হোক। হুগলি জেলাশাসকের কাছে ট্রাস্টির পক্ষ থেকে আমরা আবেদন জানিয়েছি ৷ মাহেশের ইতিহাস নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন বা যারা করবেন তাদেরকেও আমার অনুরোধ সকলে মিলে ইউনেসকোর স্বীকৃতির দাবি জানান।"

উৎকল মতেই মাহেশের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই রথকে ঘিরে। শ্রীরামপুরে জগন্নাথ ঘাটে প্রথম ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী গঙ্গার তীরে জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার মূর্তি পেয়েছিলেন। স্বপ্নাদেশে জগন্নাথের পুজো শুরু করেন। ষোড়শ শতাব্দীতে শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় শ্রীরামপুর জগন্নাথ ঘাটেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে শেওড়াফুলির রাজবাড়ির তরফে জগন্নাথদেবের জন্য বর্তমান মন্দিরের জমিও দান করা হয় ৷ পরবর্তীকালে শোনা যায় 1650 খ্রিস্টাব্দে নবাব খানে আলি খান গঙ্গা ভ্রমণের সময় এই জগন্নাথ মন্দিরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ৷ নবাব বাহাদুরের রাজস্ব মকুব করার ছাড়পত্র, দলিল, এখনও সুরক্ষিত অবস্থায় আছে বলে জানা গিয়েছে।

পরবর্তীকালে বাংলার 1265 সালে কলকাতার বড় বাজারের মল্লিক পরিবারের নিমাইচরণ মল্লিক ফের জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ করে দেন। 70 ফুট উচ্চতার মন্দির, গর্ভগৃহ থেকে নাটমন্দিরও প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই মন্দিরেই আজও জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার পুজো হয়ে আসছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের উদ্যোগেও শ্রীরামপুর জগন্নাথ মন্দিরকে নতুন করে সংস্কার করা হয়। বিশেষ করে রথযাত্রার দিন লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় এই মাহেশে। 628 বছর ধরে অমলিন ইতিহাস বহন করে চলেছে মাহেশের রথযাত্রা উৎসব।

শ্রীরামপুর, 6 জুলাই: 'কপালকুণ্ডলা' উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র উল্লেখ করেছিলেন মাহেশের রথের ৷ এবার 628তম বর্ষে পা দিল এই রথযাত্রা ৷ পুরীর পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই রথ, এমনটাই দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের ৷ এবার সেই রথ এবং মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরকে ইউনেসকো হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানাল মন্দির কর্তৃপক্ষ ৷

মাহেশের রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতির দাবি (ইটিভি ভারত)

মাহেশের রথ দেখতে দেশ-বিদেশ থেকেও বহু মানুষের সমাগম হয়। জগন্নাথকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস, মিথ ও নানা গল্প ৷ সারা বছরই বিভিন্ন পূজার্চ্চনা হয় এই মন্দির ঘিরে। শুধু তাই নয়, মাহেশের জগন্নাথ মহাপ্রভুর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে আছে দেশব্যাপী। সেই সব ইতিহাস বা তথ্য পুঁথি সম্মিলিত করে এই রথকে ইউনেসকো স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে ৷ কলকাতার দুর্গাপুজো ইউনেসকো'র স্বীকৃতি পেয়েছে আগেই। এবার সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে মাহেশ জগন্নাথ মন্দির এবং রথকেও একই হেরিটেজ তকমা দেওয়ার দাবি জানানো হল ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে ৷ সরকারের কাছে এই আবেদন জানানো হয়েছে বলেও খবর।

মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক ও সেবায়েত পিয়াল অধিকারী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম রথযাত্রা হয় এই শ্রীরামপুর মাহেশে, এটা আমাদের গর্ব। সারা ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা এটি। মাহেশের ঐতিহাসিক রথযাত্রাকে কেন স্বীকৃতি দেওয়া হবে না ? কলকাতার দুর্গাপুজোকে যেমন ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনি জগন্নাথের মাহেশের রথযাত্রাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হোক। হুগলি জেলাশাসকের কাছে ট্রাস্টির পক্ষ থেকে আমরা আবেদন জানিয়েছি ৷ মাহেশের ইতিহাস নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন বা যারা করবেন তাদেরকেও আমার অনুরোধ সকলে মিলে ইউনেসকোর স্বীকৃতির দাবি জানান।"

উৎকল মতেই মাহেশের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই রথকে ঘিরে। শ্রীরামপুরে জগন্নাথ ঘাটে প্রথম ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী গঙ্গার তীরে জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার মূর্তি পেয়েছিলেন। স্বপ্নাদেশে জগন্নাথের পুজো শুরু করেন। ষোড়শ শতাব্দীতে শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় শ্রীরামপুর জগন্নাথ ঘাটেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে শেওড়াফুলির রাজবাড়ির তরফে জগন্নাথদেবের জন্য বর্তমান মন্দিরের জমিও দান করা হয় ৷ পরবর্তীকালে শোনা যায় 1650 খ্রিস্টাব্দে নবাব খানে আলি খান গঙ্গা ভ্রমণের সময় এই জগন্নাথ মন্দিরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ৷ নবাব বাহাদুরের রাজস্ব মকুব করার ছাড়পত্র, দলিল, এখনও সুরক্ষিত অবস্থায় আছে বলে জানা গিয়েছে।

পরবর্তীকালে বাংলার 1265 সালে কলকাতার বড় বাজারের মল্লিক পরিবারের নিমাইচরণ মল্লিক ফের জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ করে দেন। 70 ফুট উচ্চতার মন্দির, গর্ভগৃহ থেকে নাটমন্দিরও প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই মন্দিরেই আজও জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার পুজো হয়ে আসছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের উদ্যোগেও শ্রীরামপুর জগন্নাথ মন্দিরকে নতুন করে সংস্কার করা হয়। বিশেষ করে রথযাত্রার দিন লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় এই মাহেশে। 628 বছর ধরে অমলিন ইতিহাস বহন করে চলেছে মাহেশের রথযাত্রা উৎসব।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.