মালদা, 28 এপ্রিল: রবিবার কালিয়াচকের নির্বাচনি সভায় আবদুল গনির জন্য প্রকাশ্যে কালিয়াচকবাসীর কাছে ক্ষমা চাইলেন খোদ তৃণমূলনেত্রী ৷ বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে ৷
এদিন কালিয়াচকের কৃষি ফার্মের মাঠে নির্বাচনি জনসভায় গনি সাহেবের জন্য উপস্থিত মানুষজনের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "আমি আবদুল গনিকে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছিলাম ৷ সুজাপুরের বিধায়কও করেছিলাম ৷ তাঁর জন্য আমি সুজাপুরবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ৷ এখন থেকে আমি নিজে সুজাপুর দেখব ৷ মালদা থেকে সুজাপুরের সমস্ত বিষয় নজর রাখবে এই জেলায় তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু ৷"
নেত্রীর কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত আশিস ৷ তিনি জানান, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মায়ের মতো ৷ তাঁর নির্দেশ শিরোধার্য ৷ সুজাপুরের উন্নয়নের জন্য আমি যাবতীয় চেষ্টা করে যাব ৷ মাথার উপর তিনি থাকছেন ৷ এখন থেকে সুজাপুরে উন্নয়নের ঢেউ বয়ে যাবে ৷"
দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর জেলায় পা দিয়েই শাহনওয়াজ আলি রায়হান জানিয়েছিলেন, সুজাপুর কেন্দ্রের দলীয় বিধায়কের আচরণে তিনি লজ্জিত ৷ এর জন্য তিনি সুজাপুরের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ৷ সম্প্রতি ঈদে বাড়ি ফিরেছিলেন সুজাপুরের তৃণমূল বিধায়ক আবদুল গনি ৷ এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি ৷ বলেন "আমি উন্নয়নে বিশ্বাস করি ৷ নিরপেক্ষভাবে এবং নিঃস্বার্থে উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাই ৷ সবসময় মানুষের কাজ করতে মুখিয়ে থাকি৷ শুধু প্রচারে লম্ফঝম্ফ করলাম, পরে গুটিয়ে গেলাম, এমন করি না ৷ আমি ব্যতিক্রমী মানুষ ৷ আমার জন্য তৃণমূলের প্রার্থী নাকি মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছে ৷ এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় ৷ ও মানুষের কাছে ক্ষমা চায়নি ৷ মানুষের কাছে আমার নামে দোষারোপ করেছে ৷ বলেছে, গনি সাহেব এখানে আসে না ৷ কিছু করেনি ৷ এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলেছে সে ৷ ওর কথায় মানুষ ক্ষুব্ধ, বিরক্ত ৷ ও যদি আমার কাছে এসে জবাবদিহি না দেয়, তবে আমি ওর পাশে দাঁড়াব না ৷"
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সুজাপুর কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে জিতেছিলেন আবদুল গনি ৷ 1 লাখ 300 হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন বিদায়ি বিধায়ক, কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরীকে ৷ গনি সাহেব কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ৷ সুজাপুরে পৈতৃক বাড়ি হলেও থাকেন কলকাতায় ৷ সুজাপুরবাসীর অভিযোগ, ভোটে জেতার পর তাঁকে আর এলাকায় দেখা যায়নি ৷ সামান্য কোনও সার্টিফিকেট পেতে হলেও এলাকার মানুষকে দৌড়োতে হয় কলকাতায় ৷ এলাকার উন্নয়নে তিনি কোনও উদ্যোগ নেননি ৷ মানুষের আপদে বিপদেও তাঁকে কাছে পায়নি কেউ ৷ এনিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও বিরক্ত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গনি সাহেবের বিরুদ্ধে নালিশ ঠোকে ৷
আরও পড়ুন
1. আপনারা কি চান আমি সিপিএমের কাছে আত্মসমর্পণ করি? ভিড়কে প্রশ্ন মমতার
2. মুখ্যমন্ত্রীকে জুতো মারার নিদান, স্বপনের বিরুদ্ধে কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল
3. টোটোচালক থেকে শাহজাহানের ডান হাত-আবু তালেবের নাগাল পেতে মরিয়া সিবিআই