কলকাতা, 18 জুলাই: লেদার কমপ্লেক্সে আরও 10 হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে প্রস্তাব। একইসঙ্গে আরও আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা ৷ বৃহস্পতিবার নবান্নে চর্ম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাতে উপস্থিত ছিলেন রাজের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা, দফতরের সচিব ও মন্ত্রীরা ৷ এই বৈঠকের পরই বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "এশিয়ার সবচেয়ে বড় চর্মনগরী কর্ম দিগন্ত নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে রিভিউ মিটিং করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকে লেদার এক্সপোর্টের রিজিওনাল চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া লেদারস গুডসপার্কের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। 10 হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসতে চলেছে ৷"
মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপনের কথায়, "1 হাজার 150 একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই লেদার কমপ্লেক্সের ইতিমধ্যে 500টি ট্যানারি এবং লেদার গুডস ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট কাজ করছে ৷ সেখানে 25 হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে 5 লক্ষ মানুষের। আরও 187টি ট্যানারি এবং 193 ফুট ওয়্যার ইউনিট এখানে আসতে চলেছে। এর ফলে আরও 10 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। এই বিনিয়োগের ফলে আরও আড়াই লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এখানে। অতএব, সব মিলে কর্ম দিগন্তে কর্মসংস্থান হবে সাড়ে সাত লক্ষ মানুষের।"
এদিন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নতুন বিনিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই আগামী দিনে লেদার রফতানিও বৃদ্ধি পাবে। এই বৈঠকে লেদার কমপ্লেক্স বা কর্ম দিগন্তের পরিকাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মুখ্যসচিব-সহ সমস্ত সচিব ও শিল্প মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার ফলে উঠে এসেছে ইতিমধ্যেই সেখানে 1 হাজার 900 কোটি টাকার পরিকাঠামো তৈরির কাজ হয়েছে। সলিড ও লিকুইড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, পানীয় জল, রাস্তা ও সয়ারেজ-সহ আরও অনেকগুলি কাজ ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজও শেষের মুখে। সবকিছু নিয়েই এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই কর্ম দিগন্তেই 475 কোটি টাকা দিয়ে 28 এমজিডি ক্ষমতা সম্পন্ন একটা বিরাট পানীয় জল প্রকল্প এখানে তৈরি হচ্ছে। এই জল প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু কর্ম দিগন্ত নয়, আশেপাশের এলাকার মানুষজনও উপকৃত হবেন। লেদার কমপ্লেক্সে উৎপাদিত পণ্যগুলিকে তুলে ধরার জন্য আলিপুর জেল মিউজিয়ামের সামনে হিডকো একটি লিডার ও কটন ইন্ডাস্ট্রি মল গড়ে তুলবে ৷ যেখানে 50 শতাংশ জায়গা বরাদ্দ করা হবে এই লেদার কমপ্লেক্সের তৈরি সামগ্রীর জন্য। বাকি 50 শতাংশে থাকবে বাংলার শাড়ি-সহ অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির জিনিসপত্র। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, এই সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের নজর করবে।