আরামবাগ, 29 জুলাই: ক্ষমতার অপব্যবহার ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে বিচারকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আরামবাগ মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা ৷ বিচারকের অপসারণের দাবিতে আজ দিনভর কর্মবিরতি পালন করলেন আইনজীবীরা ৷ এই আন্দোলনে সামিল ছিলেন, আরামবাগ মহকুমা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ৷
আজ মূল প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে দিনভবর কর্মবিরতি পালন করলেন তাঁরা ৷ আদালতের সকল বিচারকদের এজলাসেই এদিন কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না ৷ সিনিয়র আইনজীবীরা হাতে পোস্টার নিয়ে বন্ধ গেটের ভিতরে বিক্ষোভ দেখালেন ৷ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির অভিযোগ আরামবাগে সিনিয়র ডিভিশন আদালতে বিচারক গৌতম নস্করের এজলাসে গত পাঁচমাস ধরে অচলাবস্থা চলছে ৷
অভিযোগ, লোয়ার কোর্টের নির্দেশের অ্যাপিল সিনিয়র ডিভিশনে গেলে, তা আইন মেনে শোনা হচ্ছে না ৷ ইনজাকশন হলে একমাসের মধ্যে শুনানি করার নিয়ম ৷ তা-ও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ ৷ অর্ডার দেওয়ার নিয়মেও গাফিলতি থাকছে ৷ অভিযোগ করা হয়েছে, মামলার সাক্ষীদের অনেক সময় প্রভাবিত করা হচ্ছে ৷ সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাগুলির ক্ষেত্রে কোর্ট-ফি অর্ডারে অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ এমনকি মামলাকারীদের আদালতে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখছেন বিচারক ৷
বিচারক গৌতম নস্করের বিরুদ্ধে জেলা আদালত এবং কলকাতা হাইকোর্টেও অভিযোগ জানান হয়েছে ৷ তবে, এনিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি ৷ তাই বাধ্য হয়ে গত 24 জুলাই থেকে বিচারক গৌতম নস্করের এজলাস বয়কট চলছে ৷ কিন্তু, এর মধ্যে তিনি একাধিক আইন বিরুদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ এর জেরে আইনজীবীদের নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হচ্ছে ৷ আর তার প্রতিবাদে আজ এই বিক্ষোভ ৷ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনুপ কুমার দে জানিয়েছেন, আগামিকাল জেলা আদালতের মুখ্য বিচারক সেখানে যাবেন ৷
বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ ফারুক রশিদ বলেন, "বারের 120 জন আইনজীবী ছাড়াও যাঁরা সদস্য নন, তাঁরা এই বয়কটে সামিল হয়েছেন ৷ এই কোর্টে দিনের পর দিন মামলা পড়ে থাকছে ৷ এক একটি মামলার রায় পেতে ছয় মাস পেরিয়ে যাচ্ছে ৷ নিয়ম অনুযায়ী, তা হওয়ার কথা নয় ৷ মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সাক্ষীকে নানাভাবে কোর্টের ভিতরেই প্রভাবিত করা হচ্ছে ৷ আদালতে এসিজিএম থাকাকালীন যেসব আইনজীবীরা তাঁর বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি প্রতিশোধমূলক আচরণ করা হচ্ছে ৷ সমস্যা না মেটার কারণেই এদিন বিক্ষোভ দেখান হয় ৷"
বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শুনানির জন্য আসা লোকজন ৷ অনেকেই অভিযোগ করেছেন, মামলার তারিখ থাকায় অনেক দূর থেকে আদালতে এসেছিলেন ৷ কিন্তু আদালতে ঢুকতে পারছেন না ৷