আসানসোল, 7 অগস্ট: কুলটির রক্তা গ্রামে জনৈক অসীম গোপের বাড়িতে বিরাট আকারে ধস নামে মঙ্গলবার। বাড়ির বাগানবাড়িতে এই ধসে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। কুয়োর চেয়ে বড় ব্যাসের এই ধসের গভীরতা অন্ততপক্ষে 30 ফুট ছাড়িয়ে যায়। বুধবার সকাল থেকে সেই ধস বাড়তে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই অসীম গোপের বাড়ির প্রাচীরের একটি অংশ ধসের কারণে ভেঙে পড়েছে। পাশেই রয়েছে তাদের শৌচাগার। আশেপাশের প্রতিবেশীরাও এই ধসের ঘটনায় আতঙ্কিত। যে হারে ধস বাড়ছে তাতে গ্রাস করে নিতে পারে অসীম গোপ বা তাঁর প্রতিবেশীদের বাড়িও। আর তাই আতঙ্কে পুনর্বাসনের দাবি নিয়ে ইসিএলের সদর দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর সঙ্গেই পথ অবরোধ করল স্থানীয় বাসিন্দারা। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলার পর ইসিএলের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে একটি আবাসন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বাকি ধসের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইসিএল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় করে একনাগাড়ে বৃষ্টি পড়ছিল। আর সেই বৃষ্টি চলাকালীনই বিরাট শব্দ শুনতে পায় কুলটির সাঁকতোড়িয়া সংলগ্ন রক্তা গ্রামের বাসিন্দারা। এই শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা দেখে জনৈক অসীম গোপের বাগানের মধ্যে বিরাট গোলাকৃতি হয়ে ধস নেমেছে এবং সেই ধস এতটাই গভীর যে উপর থেকে দেখা যাচ্ছে না। স্বভাবতই ভয় পেয়ে যান তারা। একেবারে গৃহস্থ বাড়ির মধ্যে ধসে আতঙ্ক ছড়িয়ে যায় এলাকায়। সারারাত প্রায় ঘুমোতে পারেনি অসীম গোপের পরিবার ৷ এই ধস কতটা গ্রাস করতে পারে তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয়। অতীতে দেখা গিয়েছে এই ধসের কারণে প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এমনকী উঠোনে ধসের কারণে একটি এক যুবতীও মাটির তলায় চলে গিয়েছিল এই সাঁকতোড়িয়া এলাকাতেই। অথচ এখানেই ইসিএলের সদর দফতর ৷
অন্যদিকেই, আতঙ্কের ফলে বুধবার দুপুর থেকে ইসিএলের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে হবে অবিলম্বে। দীর্ঘক্ষণ ধরে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি সদর দফতরের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। সেই রাস্তাও কয়েক ঘন্টা ধরে অবরোধ হয়ে থাকে। এরপর কয়েকজন প্রতিনিধি ভিতরে গিয়ে ইসিএলের ডিরেক্টর পার্সোনালের সঙ্গে দেখা করেন।
সেই প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা চন্দন আচার্য বলেন, "শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে অবিলম্বে ইসিএলের একটি আবাসন দেওয়া হবে থাকার জন্য। পাশাপাশি কী কারণে এই ধস নেমেছে তা দেখার জন্য স্পেশাল একটি টিম তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তীকালে ধস পুনর্বাসনের নিয়ম অনুসারে ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসনের দিকটি দেখা হবে।" অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিমান আচার্য হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "আগামী 10 দিনের মধ্যে যদি ইসিএল সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা না ভাবে তাহলে আমরা লাগাতার ইসিএলের এই সদর দফতরের গেট বন্ধ করে দেব। যাতে কেউ ঢুকতে না পারে।" যদিও ইসিএলের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কেউই ৷