কলকাতা, 20 মার্চ: গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রোমোটার ও তাঁর সহকারী । তাঁদেরকে মুখোমুখি বসিয়ে রাতভর জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে এলাকায় অন্য কোনও প্রোমোটার যাতে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারেন, তার জন্যই চটজলদি ফ্ল্যাট তুলে দেওয়ার টার্গেট ছিল ধৃত প্রোমোটার ওয়াসিমের ।
লালবাজার সূত্রের খবর, তাঁকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন পিলার তৈরিতেই ছিল গাফিলতি । ফ্ল্যাটগুলির পিলার তৈরিতে টিনের ড্রামের উপর ও নিচের অংশ কেটে তা পর পর বসিয়ে দিতেন প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম । অভিযোগ, সেই টিনের মধ্যেই সাদাবালি ও তার সঙ্গে সিমেন্ট আর পাথরকুচি দিয়ে পিলার ঢালাই করা হয়েছিল ৷
পুলিশের অনুমান, এভাবে ঢালাইয়ের জন্যই ভার রাখতে না পেরে ধসে গিয়েছে গার্ডেনরিচের আজাহার মোল্লাবাগানে নির্মীয়মান ওই বহুতল । তবে সংশ্লিষ্ট বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে শুধু গাফিলতি ছিল না, নিম্নমানের জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয়েছিল ৷ সেটা ধৃত প্রোমোটারকে জেরা করে একপ্রকার নিশ্চিত কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা ।
অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার যে সংস্থার কাছ থেকে ইট, বালি, সুড়কি সিমেন্ট অর্থাৎ ফ্ল্যাট তৈরি করার যে সমস্ত সামগ্রী কিনেছিল, সেগুলোর গুণমানও ঠিক ছিল না । এবার সেই নির্মাণের সামগ্রী সরবরাহের পিছনে থাকা সিন্ডিকেটের মাথাদের নাম প্রাথমিকভাবে পেয়েছেন তদন্তকারীরা । তাদের সন্ধান চালাচ্ছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে ফিরোজ নামে একজন নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের বিষয়টি ধৃত প্রোমোটারের হয়ে দেখতেন । কোথা থেকে নির্মাণ সামগ্রী কেনা হবে, সেটা ফিরোজই খুঁজে বের করতেন ৷ যদিও লালবাজারের গোয়েন্দাদের মতে, বিশেষ কারও কাছ থেকে নয় গার্ডেনরিচের একাধিক সিন্ডিকেটের কাছ থেকে তিনি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী কিনতেন তিনি । যদিও তদন্তের স্বার্থে এই বিষয়গুলি এখনই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না ।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘এই প্রোমোটারকে জেরা করে এখনও পর্যন্ত আমরা বেশ কিছু মিসিং লিঙ্ক পেয়েছি এবং সেই সকল মিসিং লিঙ্কগুলিকে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভালোভাবে দেখা হচ্ছে । এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুরো আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়র কেউ প্রয়োজন করলে নোটিশ দিয়ে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হতে পারে ।’’
আরও পড়ুন: