কলকাতা, 29 ডিসেম্বর: রাজ্যে পাসপোর্ট কেলেঙ্কারির ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ । ধৃতের নাম মনোজ গুপ্তা । তাঁকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছে । জানা গিয়েছে, বেহালায় ট্রাভেল এজেন্সি খুলে তার আড়ালে চলতো জাল পাসপোর্ট তৈরি । সেই সঙ্গে মোটা টাকার বিনিময়ে চলতো নকল আধার তৈরির কারবারও ।
গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ উত্তর 24 পরগনার চাঁদপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন এসটিএফের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক । লালবাজার সূত্রের খবর, মনোজ গুপ্তা সীমান্তবর্তী এলাকায় থাকতেন ৷ সেখান থেকেই বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের নকল নথিপত্র দিয়ে ভারতে ঢোকার ব্যবস্থা করতেন তিনি ।
পুলিশ জানতে পেরেছে, অন্যের আধার কার্ড সংগ্রহ করে আধার নম্বর এক রেখে তাতে অন্যের নাম, ছবি, ঠিকানা দিয়ে তৈরি হয়ে যেত ভুয়ো আধার কার্ড । আর সেই আধার কার্ডের উপর ভিত্তি করেই বানানো হত জাল পাসপোর্ট । ধৃত মনোজ গুপ্তা নিজস্ব কম্পিউটারেই জাল নথি বানাতেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ । এর আগেও, তাঁর খোঁজে দু'বার তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ । অবশেষে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হল ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিদেবপুর থানা এলাকায় 297/2 মতিলাল গুপ্ত রোডে পাসপোর্ট জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড মনোজ গুপ্তার একটি রেস্তোরাঁ আছে । সেই রেস্তোরাঁর দোতালায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির অফিস আছে । সেই অফিস থেকেই জাল পাসপোর্ট তৈরি করা হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ এলাকাবাসী সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত পরশুদিন লালবাজার থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ এসে সারারাত ধরে এই রেস্তোরাঁর পাশে ঘাঁটি গেড়েছিল ।
সেই সঙ্গে কড়া নজরদারি চালানো হয় হরিদেবপুর থানা এলাকার সবুজ সংঘ ক্লাবের পাশে অবস্থিত সুমিত গুপ্তের বাড়িতে । ইতিপূর্বে এই ঘটনায় ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত দীপঙ্কর নামে একজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । পাসপোর্ট, আধার কার্ডের মতো নকল নথিপত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাঁকে গ্রেফতার করে ৷
শনিবার ধৃত মনোজ গুপ্তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও যোগাযোগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা । আজ মনোজ গুপ্তাকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । তাঁরা বিশদ তথ্য জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন ৷ এই চক্রের পেছনে আর কারা জড়িত রয়েছে এবং তারা কীভাবে এই অসাধু কাজ পরিচালনা করেন, এসব তথ্য জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা ৷ চক্রের পাণ্ডারা আর কোনও অসাধু কর্মের ছক কষেছে কি না, তাও জানতে চায় পুলিশ ৷