কলকাতা, 30 অক্টোবর: আগামী বছরের গোড়ার দিকেই বাতিল হতে চলেছে প্রায় পনেরোশো'র কাছাকাছি বেসরকারি বাস ও মিনিবাস। তাই রাস্তায় বাসের অভাবে যেমন সমস্যায় পড়তে হবে যাত্রীদের, তেমনই নতুন বাস কেনার ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে বেগ পেতে হবে বাস মালিকদেরও। তাই বাস বাতিলের মেয়াদ 15 বছর থেকে বেরিয়ে 20 বছর করার দাবি জানাল বেসরকারি বাস মালিকদের একাংশ। এই মর্মে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি সাবার্বান বাস সিন্ডিকেট।
2018 সালে শেষবার বাসের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছিল 1 টাকা। মাঝে কেটে গিয়েছে অনেকগুলি বছর। এর মধ্যে একাধিকবার বেড়েছে জ্বালানির দাম ৷ সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাসের যন্ত্রাংশের দাম ও বাস চালাতে যাবতীয় সরকারি কাগজপত্র তৈরির খরচও।
অন্যদিকে, কোভিডের পরে বাস মালিক পক্ষ ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানালেও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে সাধারণ যাত্রীদের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। তাই আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য না রাখতে পেরে বাস শিল্প অলাভজনক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, বর্তমানে একটি নতুন বাস কিনতে যে বিপুল খরচ হয়, সেই সামর্থ্য বা সাহস পাচ্ছেন না মালিকপক্ষ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, "একটি বাসের সময়সীমা 15 বছর করার কোনও ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টির দিকে রাজ্যে পরিবহণ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে গাড়ির মেয়াদ বাড়িয়ে 15 বছরের পরিবর্তে 20 বছর করার দাবি জানানো হয়েছে। দাবি মানা হলে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীদের লাভ হবে, অন্যদিকে বায়ু দূষণও তেমন একটা হবে না।"
স্ক্র্যাপ নীতিতে সামান্য পরিবর্তন এনে বাসের মেয়াদ 15 থেকে 20 বছর বাড়াতে বেসরকারি বাস মালিকপক্ষের যুক্তি, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক হাজার বাস বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও, প্রচুর সংখ্যক ইলেকট্রিক বাস চালু করেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, এখন মূলত বিএস 4 এবং বিএস 6-এর গাড়িগুলি চলছে, এগুলি অনেক উন্নতমানের ৷ তাই বাসগুলি বায়ু দূষণও করে অনেক কম। এখন তাই যে সব রাস্তায় বিএস 4 ও বিএস 6-এর গাড়ি বেশি, সেখানে দূষণও অনেকটাই কম।
একদিকে যেমন বাস মালিক সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে, অন্যদিকে রাজ্য সরকার ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে ৷ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এমনটাই আশ্বাস মিলেছে । প্রসঙ্গত, গণপরিবহণের প্রায় 80 শতাংশ বেসরকারি বাস পরিবহণের উপরেই নির্ভরশীল।