ETV Bharat / state

ডিজিটাল যুগে ফিকে আকবরের হালখাতা, নিয়মরক্ষায় টিকে পয়লার ঐতিহ্য - Poila Baishakh 2024

Bengali New Year 2024: নতুন বছরের প্রথম দিনটাকে হালখাতা হিসেবে পালন করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। তার সঙ্গে দোকানে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো করা হয়। তাই বাংলা নববর্ষের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে হালখাতা। তবে মোঘল সম্রাট আকবরের আমলে শুরু হওয়া হালখাতার জৌলুস এখন হারিয়েছে ৷ পয়লা বৈশাখে এখন হালখাতা বিক্রির হাল বেহাল ৷ ক্রেতার দেখা না-পাওয়ার আক্ষেপ ব্যবসায়ীদের ৷

Bengali New Year 2024
Bengali New Year 2024
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 13, 2024, 8:35 PM IST

Bengali New Year 2024

কলকাতা, 13 এপ্রিল: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ ৷ আর এই পার্বণের অন্যতম পয়লা বৈশাখ। ঐতিহ্য মেনেই আজও অনেককেই দেখা যায় বাংলার নববর্ষের পয়লা তারিখে লক্ষ্মী ও গণেশের মূর্তিপুজো করতে ৷ সঙ্গে হালখাতাও করেন। মূলত ব্যবসায়ীরা এই হালখাতা পুজো করে 'থাকেন। তবে সেই প্রথা এখন ক্রমশ লুপ্তপ্রায়। পয়লা বৈশাখের আগে 'মাছি মারছেন' হালখাতা বিক্রির দোকানদাররা। বেহাল অবস্থা বিক্রি-বাট্টার।

মোঘল যুগে আকবর শুরু করেছিলেন হালখাতা। হাল শব্দের অর্থ নতুন। প্রতিবছর প্রজারা তাঁদের খাজনা, দেনা-পাওনা মিটিয়ে নতুন বছরে নতুন খাতা করতেন। পরবর্তী সময় বাংলায় সেই প্রচলন থেকে যায়। যারা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বাংলার নববর্ষে এই নতুন খাতা পুজো করাতেন। তবে হিসেব নিকেশের সেই খাতা যুগের সঙ্গে অতীত হয়েছে। তার জায়গা নিয়েছে কম্পিউটার আধুনিক সফটওয়্যার। তাই হালখাতার বিক্রির হাল খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে আগের প্রজন্ম তবু এই খাতা কেনাকাটি করলেও এই প্রজন্ম একদমই কেনাকাটি করছে না বলেই দাবি বিক্রেতাদের।

পাটোয়ার বাগান থেকেই কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলিতে নানা ধরনের হালখাতা যায়। ব্যবসায়ী আফরোজ আলম খান জানাচ্ছেন, বাপ-ঠাকুরদার ব্যবসা তাই প্রতিবছর কিছু মাল রেখে চালাচ্ছি যেভাবে বিক্রিবাট্টা কমছে তাতে হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যে এই হালখাতা ব্যবসা সম্পূর্ণভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে। জাবেদা খাতা, খতিয়ান খাতা, ডাক খাতা, খানা খাতা দিস্তা হিসেবে বিক্রি হয়। হাফ দিস্তা 12 থেকে 3 দিস্তা পর্যন্ত । 90 টাকা প্রতি দিস্তা ৷

আরেক ব্যবসায়ীর কথায়, "একসময় পয়লা বৈশাখের আগে বহু মানুষজন আসতেন হালখাতা নিতে। আর আজ বসে বসে সময় কাটছে। হাতেগোনা কিছু লোকজন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এই খাতা। বেশ কয়েক বছর আগে এই সময় হালখাতা 10-12 লাখ টাকার বিক্রি হলেও এবছর নামতে নামতে সেই বিক্রি-বাট্টা এসে দাঁড়িয়েছে লাখ খানেক টাকায়। অনেকের তারও কম। এর উপর রয়েছে যারা এই খাতা বানাতেন সেই কারিগরের অভাব ৷ প্রতিবছর বিক্রি হয় না মাল রয়ে যায় তবুও হাতেগোনা যে কয়েকটা কারিগর আছেন তাঁদের রাখতে গেলে কাজ দিতে হবে। তাই প্রতিবছরই অল্পবিস্তর বানাতে হয়। আর এভাবেই এখন এই ব্যবসা প্রায় অলাভজনক বলা যেতে পারে।"

আরও পড়ুন:

  1. নববর্ষের আজকাল থেকে ফ্যাশন ফান্ডা, নানা কথায় ঋতুপর্ণা-চৈতী-সোহম
  2. বছরের শুরুর দিন থেকে বদলে গেল তারাপীঠের পুজো দেওয়ার নিয়ম, জানুন বিস্তারিত
  3. নববর্ষে ষোল আনা বাঙালিয়ানায় রসনাতৃপ্তির ডেস্টিনেশন 'ভূতের রাজা দিল বর'

Bengali New Year 2024

কলকাতা, 13 এপ্রিল: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ ৷ আর এই পার্বণের অন্যতম পয়লা বৈশাখ। ঐতিহ্য মেনেই আজও অনেককেই দেখা যায় বাংলার নববর্ষের পয়লা তারিখে লক্ষ্মী ও গণেশের মূর্তিপুজো করতে ৷ সঙ্গে হালখাতাও করেন। মূলত ব্যবসায়ীরা এই হালখাতা পুজো করে 'থাকেন। তবে সেই প্রথা এখন ক্রমশ লুপ্তপ্রায়। পয়লা বৈশাখের আগে 'মাছি মারছেন' হালখাতা বিক্রির দোকানদাররা। বেহাল অবস্থা বিক্রি-বাট্টার।

মোঘল যুগে আকবর শুরু করেছিলেন হালখাতা। হাল শব্দের অর্থ নতুন। প্রতিবছর প্রজারা তাঁদের খাজনা, দেনা-পাওনা মিটিয়ে নতুন বছরে নতুন খাতা করতেন। পরবর্তী সময় বাংলায় সেই প্রচলন থেকে যায়। যারা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বাংলার নববর্ষে এই নতুন খাতা পুজো করাতেন। তবে হিসেব নিকেশের সেই খাতা যুগের সঙ্গে অতীত হয়েছে। তার জায়গা নিয়েছে কম্পিউটার আধুনিক সফটওয়্যার। তাই হালখাতার বিক্রির হাল খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে আগের প্রজন্ম তবু এই খাতা কেনাকাটি করলেও এই প্রজন্ম একদমই কেনাকাটি করছে না বলেই দাবি বিক্রেতাদের।

পাটোয়ার বাগান থেকেই কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলিতে নানা ধরনের হালখাতা যায়। ব্যবসায়ী আফরোজ আলম খান জানাচ্ছেন, বাপ-ঠাকুরদার ব্যবসা তাই প্রতিবছর কিছু মাল রেখে চালাচ্ছি যেভাবে বিক্রিবাট্টা কমছে তাতে হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যে এই হালখাতা ব্যবসা সম্পূর্ণভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে। জাবেদা খাতা, খতিয়ান খাতা, ডাক খাতা, খানা খাতা দিস্তা হিসেবে বিক্রি হয়। হাফ দিস্তা 12 থেকে 3 দিস্তা পর্যন্ত । 90 টাকা প্রতি দিস্তা ৷

আরেক ব্যবসায়ীর কথায়, "একসময় পয়লা বৈশাখের আগে বহু মানুষজন আসতেন হালখাতা নিতে। আর আজ বসে বসে সময় কাটছে। হাতেগোনা কিছু লোকজন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এই খাতা। বেশ কয়েক বছর আগে এই সময় হালখাতা 10-12 লাখ টাকার বিক্রি হলেও এবছর নামতে নামতে সেই বিক্রি-বাট্টা এসে দাঁড়িয়েছে লাখ খানেক টাকায়। অনেকের তারও কম। এর উপর রয়েছে যারা এই খাতা বানাতেন সেই কারিগরের অভাব ৷ প্রতিবছর বিক্রি হয় না মাল রয়ে যায় তবুও হাতেগোনা যে কয়েকটা কারিগর আছেন তাঁদের রাখতে গেলে কাজ দিতে হবে। তাই প্রতিবছরই অল্পবিস্তর বানাতে হয়। আর এভাবেই এখন এই ব্যবসা প্রায় অলাভজনক বলা যেতে পারে।"

আরও পড়ুন:

  1. নববর্ষের আজকাল থেকে ফ্যাশন ফান্ডা, নানা কথায় ঋতুপর্ণা-চৈতী-সোহম
  2. বছরের শুরুর দিন থেকে বদলে গেল তারাপীঠের পুজো দেওয়ার নিয়ম, জানুন বিস্তারিত
  3. নববর্ষে ষোল আনা বাঙালিয়ানায় রসনাতৃপ্তির ডেস্টিনেশন 'ভূতের রাজা দিল বর'
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.