কলকাতা, 9 এপ্রিল: গার্ডেনরিচ আবহে বেআইনি নির্মাণ ঠেকানোয় তৎপরতার পর এবার শহরে জলাশয় রক্ষা ও ভরাট ঠেকানোয় বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা কর্পোরেশন। বেআইনিভাবে জলাশয় ভরাট করা বা জলাশয় রক্ষণাবেক্ষণ না করার ঘটনা নজরে এলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতার পৌর কমিশনার ধবল জৈন। 24 ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার পাশাপশি থানায় এফআইআর করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷
শহরে জলাশয় ভরাট করে একের পর এক বহুতল তলার অভিযোগ নতুন নয়। তবে সেসব ক্ষেত্রে আদালতের চাপ না এলে তেমন কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তবে গার্ডেনরিচকাণ্ডে সেই ইস্যু আরও একবার সামনে এসে গেল। ভেঙে পড়া বাড়ি জলাশয় ভরাট করে তার উপর তৈরি হয়েছিল বলেই অভিযোগ উঠেছে। কর্পোরেশন সেই দাবি খারিজ করলেও বাস্তবে যে দায় এড়াতে পারছে না, একই সঙ্গে তা প্রশাসনের মাথা ব্যথারও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এই নয়া নির্দেশিকায় ফের প্রমাণিত হল আরও একবার।
রক্ষণাবেক্ষণ না করা, জলাশয় বা ভরাট করা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় ছয় দফা পদক্ষেপের কথা বলেছেন পৌর কমিশনার। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জলাশয় ভরাট করার কোনও ধরনের অভিযোগ পেলেই 24 ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বরো এক্সিকিউটিভ অফিসার প্রয়োজনে ঘটনাস্থলে যাবেন ও যাবতীয় পদক্ষেপ নেবেন। এক্সিকিটিভ আধিকারিক অভিযুক্তকে নোটিশ দেবে শুধু তাই নয়, সঙ্গে স্থানীয় থানায় অভিযোগও দায়ের করবেন। সেই পদক্ষেপ নেওয়ার সব রিপোর্ট পরিবেশ ও ঐতিহ্য বিভাগের ডিজি, জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি ও বিল্ডিং বিভাগের ডিজিকে পাঠাতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া জলাশয়ের ক্ষেত্রে পৌর আইনের 496 ধারায় নোটিশ জারি করতে হবে। যেটা জঞ্জাল সাফাই না করায় মশা বাহিত রোগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর বোঝায়। যদি কোনও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জলাশয় এমন মজে যাওয়া অবস্থায় পাওয়া যায় তাহলে নোটিশ দেওয়া হবে মালিককে।
মালিক না থাকলে ওই জলাশয়ের সামনে নোটিশ লাগাতে হবে। মৎস্য দফতরের আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ কথা বলা হয়েছে। জিও ট্যাগ মারফত যে জলাশয় তালিকা সেটায় আপডেট করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। এই গোটা কর্মকাণ্ড করার জন্য প্রতি বরো স্তরে তৈরি হচ্ছে একটি করে কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান হবেন ওই বরোর চেয়ারম্যান। আহ্বায়ক হবেন বরো এক্সিকিউটিভ (সিভিল)। সদস্য হবেন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বিল্ডিং, জল সরবরাহ, পরিবেশ, জমি মূল্যায়ন আধিকারিক, বি এল আর ও আধিকারিক, সাফাই বিভাগের আদিস্তেন্ট ডিরেক্টর, স্থানীয় থানার ওসি। কোনো অমীমাংসিত ঘটনা পৌর কমিশনার দেখবেন। এই কমিটি প্রতি 15 দিন অন্তর রিপোর্ট জমা দেবেন পৌর কমিশনার কাছে।
আরও পড়ুন