দুর্গাপুর, 16 মে: নির্বাচন মিটেছে ৷ প্রচারের ব্যস্ততা থেকে আপাতত ছুটি ৷ এবার সময় পরিবারকে 'সময়' দেওয়ার ৷ এরই মধ্যে প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের স্ত্রী পুনম আজাদ ঝায়ের জন্মদিন পালন করা হয়েছে কাছের মানুষদের সঙ্গেই ৷ এই উপলক্ষ্যে কীর্তি আজাদের রাজনীতিতে আসা নিয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় মাতলেন তারকা দম্পতি ৷
কীর্তি আজাদের এই সাফল্যে স্ত্রী হিসাবে পুনমের ভূমিকা কেমন ছিল? জবাবে পুনম দেবী বলেন, "একজন অর্ধাঙ্গিনীর যা ভূমিকা হওয়া প্রয়োজন, আমি সেটাই পালন করেছি। আমার এবং কীর্তির যা কিছু কাজ তা আমরা অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিতাম। কীর্তি আজাদ আমার শক্তি ৷ আমি তাঁর বিভিন্ন কাজ দেখতাম।"
কীর্তি আজাদ একজন ক্রিকেটার। শুধু তাই নয় দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ দেওয়া ক্রিকেট ছিল জীবন। কিন্তু তার রাজনীতিতে আসা কিভাবে? তাতে কি আপনার কোনও ভূমিকা ছিল? পুনম বলেন, "ক্রিকেটের প্রতি আমার রুচি ছিল না। আমাদের দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল। দু'টি সন্তানের জন্ম হয় খুব তাড়াতাড়ি। তখন আমার ক্রিকেটের প্রতি একটু অনুরাগ জন্মায়। কিন্তু একজন খেলোয়াড়ের জীবন খুব ছোট হয়। 35-40 বছর বয়সের পর তাঁকে খেলাধুলা ছেড়ে দিতেই হয়। আমি এরপরেই তাঁকে বলি রাস্তা বদলাতে হবে। আদবানিজির ছেলে কীর্তির সঙ্গে খেলাধুলা করতেন। অনেকদিন ধরেই তিনি বলছিলেন আদবানীজির সঙ্গে একবার দেখা করার জন্য। আদবানিজি পাঁচ বছর ধরে কীর্তির সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। আমিই একদিন কীর্তিকে বোঝালাম রাষ্ট্রায়ত্ত সেইল-এর উচ্চপদের চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কথা।
পুনমের কথায়, " এরপর কীর্তি ও আমি বিজেপিতে যোগ দিলাম। তখন বিজেপিতে সেলিব্রেটি বলতে শত্রুঘ্ন সিনহা, কীর্তি আজাদ ও যশবন্ত সিনহা। টিভিতে দেখার পর আমার শ্বশুরমশাই কীর্তিকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। শুধু বললেন পুনম এবং তার দুই ছেলে এখানে থাকবে কিন্তু কীর্তিকে এখান থেকে চলে যেতে হবে।"
পুনম আজাদ ঝা দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিজেপির হয়ে গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। বিহারে বিজেপির মহিলা মোর্চার দায়িত্ব সামলেছেন। একধারে সংসার অন্যদিকে রাজনীতি, পাশাপাশি স্বামীর ক্রিকেটার থেকে রাজনৈতিক জীবনে উত্তরণ সবকিছুই সামলেছেন একজন দক্ষ কারিগরের মত। 59তম জন্মদিনে তাই তার এমন অনেক অজানা কথা তিনি তুলে ধরলেন ইটিভি ভারতের কাছে। ক্রিকেটার কীর্তি আজাদের জীবনে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। মহিলাদের সঙ্গে কীর্তি আজাদের ছবি বিভিন্ন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। তাই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীতে মাঝেমধ্যেই অশান্তিও লেগেছে কিন্তু আবার সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে ৷
এই বিষয়ে পুনম আজাদ ঝা বলেন, "বয়স বাড়ার পরে কীর্তি অনেক পরিণত হয়ে গিয়েছে। এক সময় লোভনীয় চাকরি ছেড়ে কীর্তিকে রাজনীতিতে আসার যে রিস্ক সেটা আমি নিতে বলেছিলাম। তবে সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিল যেদিন মিথিলা থেকে সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন কীর্তি আজাদ। সেদিন আমার শ্বশুরমশাই সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন। তিনি কংগ্রেসের জন্য আজীবন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল মিথিলা থেকে সাংসদ হওয়া। নিজে না হতে পারলেও তাঁর সন্তান মিথিলা থেকে সাংসদ হওয়ার কারণে তিনি অত্যন্ত খুশি হয়ে কীর্তিকে পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন, আমি দারুন গর্বিত।"
আরও পড়ুন