কলকাতা, 30 অক্টোবর: রাত পোহালেই আলোর উৎসব। তার আগে ফের মশাল হাতে ন্যায় বিচারের দাবি রাজ্যে। ন্যায় বিচারের দাবিতে বুধবার আবারও রাজপথে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ন্যায় বিচারের পাশাপাশি ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে স্বচ্ছতা আনার দাবি তুলেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। অন্যদিকে, নির্যাতিতার ন্যায় বিচার বর্তমানে সিবিআইর হাতে। তাই এদিন বিকেলে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। মিছিলে পা মিলিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসক থেকে শুরু করে বহু সাধারণ মানুষও।
জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, "স্বচ্ছতা আনার জন্য সদিচ্ছার প্রয়োজন, কমিটির নয়। আমাদের দাবি সিবিআই আরজি করের তদন্ত অবিলম্বে শেষ করুক। তার সঙ্গে রাজ্য সরকার এবার রোগী সুরক্ষার বিষয়ে নজর দিক। কারণ একের পর এক ঘটনা ঘটছে।" জুনিয়র চিকিৎসক হিমাদ্রী বেরাও সিবিআইয়ের দিকে একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন।
তাঁর প্রশ্ন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিহতের এন্ডোসার্ভাইক্যাল ক্যানালে সাদা, গাঢ়, চটচটে তরলের অস্তিত্ব পাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে। এই তরলের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে কি? হলে রিপোর্ট কোথায়? তাছাড়া চার্জশিট অনুযায়ী, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তিলোত্তমার শরীরের উপরের অংশে ধৃত সঞ্জয় রায়ের লালারস থাকার অস্তিত্ব মিলেছে। কিন্তু, লালারসের ডিএনএ পরীক্ষার উল্লেখ থাকলে সাদা, গাঢ় তরলের ডিএনএ পরীক্ষার উল্লেখ নেই কেন?"
অন্যদিকে, ন্যায় বিচারের দাবিতে বুধবার শিয়ালদায় মিছিল করেন থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য়রা। শাসকপন্থী জুনিয়র চিকিৎসক সংগঠনের গলাতেও শোনা যায় ন্যায় বিচারের দাবি। তবে তা নিয়ে সংশয় দেখা গেল সিনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে। সিনিয়র চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "বিচার চাইলেই শাসক দল জেলে ভরে দিচ্ছে। তাই শাসকপন্থী চিকিৎসক হয়ে তাঁরা কত দূর ন্যায় বিচারের কথা বলতে পারবেন সেই নিয়ে প্রশ্ন আছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ জানে কারা কাটমানি নেয়? কারা তোলাবাজি করে?"
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মশাল মিছিলকে একযোগে আক্রমণ করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, "জুনিয়র চিকিৎসকদরে আগেই সিবিআই অভিযান করা উচিত ছিল । কিন্তু তা না করে তাঁরা কর্মবিরতি করেছেন। তার জেরে সরকারি হাসপাতালে যাওয়া গরিব মানুষের ক্ষতি হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের লাভ হয়েছে!"
পাশাপাশি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "সিজিও অভিযান করছেন ভালো কথা! নবান্ন অভিযানও করুন। আপনাদের সুপ্রিম কোর্টে অভিযানও করতে হবে। তদন্ত এখন সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতেই হচ্ছে। কিছু লোকের টিভিতে থাকার রোগ হয়েছে। তাঁরা মিছিল করে বা অন্য যে কোনও উপায়ে খবরে থাকতে চান।"